|
|
|
|
এআইএফএফ নাজেহাল ক্লাবদের দাবিতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আই লিগ চালাতে হবে ক্লাবগুলোকেই, এই দাবি নিয়ে এ আই এফ এফকে তীব্র সমস্যার মুখে ফেলে দিল দেশের সেরা ক্লাব। স্পনসর আই এম জি কর্তাদের সামনে নানা প্রশ্ন তুলে ক্লাবগুলো জানিয়ে দিল, তাদের নিয়ে সম্পূর্ণ আলাদা সংস্থা তৈরি করতে হবে লিগ চালানোর জন্য। এবং ক্লাবগুলোকে কমিটির শেয়ার হোল্ডার করতে হবে। এগারো ক্লাবের তোপের সামনে পড়ে স্পনসররাও।
ক্লাবগুলোর যৌথ সিদ্ধান্ত, যতক্ষণ না ফেডারেশন তাদের দাবি মানবে, তারাও এ এফ সির লাইসেন্সিং সংক্রান্ত নিয়ম মানবে না। ১০ তারিখ শেষ চলে গেলেও। কোনও নতুন প্রস্তাবও দেবে না। ক্লাবগুলোর রণং দেহি মেজাজ ও ঐক্যবদ্ধ মূর্তি দেখে এ আই এফ এফ ও স্পনসর রক্ষণাত্মক। সোমবারের মধ্যে উত্তর দেবে বলেছে।
ফেডারেশন সচিব কুশল দাস এই বৈঠকের পরে কিছু বলতে চাননি। শুধু বলেন, “আমরা যে ক্লাবকর্তাদের নিয়ে বসেছি, এটাই স্বচ্ছতার পরিচয়।” তবে ফেডারেশনের অনেক কর্তাই বলছেন, ‘‘ক্লাবদের দাবি নিয়ে এআইএফএফের কিছু করার নেই। টিভি স্বত্ব বিক্রি হয়ে গিয়েছে দশ বছরের জন্য। এখন যা করার আইএমজিই করতে পারে। আলাদা সংস্থা, টিভি স্বত্বের প্রশ্নের জবাব দেবে তারাই।”
ফলে নতুন বিতর্কের সামনে ভারতীয় ফুটবল। ক্লাবগুলোর দাবি মেটাবে কারা? আই এম জি না এ আই এফ এফ?
তিন ঘণ্টার সভায় স্পনসর আই এম জি-র তরফে উপস্থিত ছিলেন ইন্টার মিলানের প্রাক্তন সি ই ও জেফারসন স্ল্যাক। তাঁরাও হতচকিত হয়ে পড়েছেন ক্লাবগুলোকে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে। কথা ছিল, ক্লাবগুলোর তরফে মোহনবাগান কর্তা দেবাশিস দত্ত, পুণের চিরাগ তানা পেশ করবেন দাবি। কিন্তু সভায় ইস্টবেঙ্গল কর্তা স্বপন বল, ইউনাইটেড কর্তা নবাব ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে সালগাওকর, ডেম্পো প্রতিনিধিরা যেভাবে ফেডারেশনকে তোপের মধ্যে ফেলেছেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ।
যে সব প্রশ্নের সামনে এ আই এফ এফ পড়েছে, তা আই লিগ ছাড়িয়ে অন্য বিষয়েও রয়েছে।
১) কেন কাঠমাণ্ডুর পাহাড়ে টুর্নামেন্ট হবে, আর ভারত দুবাইয়ের সৈকতে প্র্যাক্টিস করতে যাবে? প্রিয়বাবুর আমলে কাঠমান্ডুতে খেলতে যাওয়ার আগে কালিম্পংয়ে ট্রেনিং করতে গেছিল।
২) কেন ফেডারেশন চারটি অ্যাকাডেমির জন্য বরাদ্দ খরচ ১৪টি ক্লাবকে ভাগ করে দিল না? তা হলে তো ১৪টি অ্যাকাডেমি হয়ে যেত দেশে!
৩) আই লিগের চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফিটা ঠিক কী রকম দেখতে? ওটা সারা দেশে পরিচিত করার চেষ্টা হয় না কেন?
৪) আই লিগ শুরুর আগে সব অধিনায়ককে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন কেন হয় না? কেন মার্কেটিং কিছু হয় না?
৫) এ আই এফ এফ সব টাকা পায় আই লিগের জন্য। তার টিভি স্বত্ব কেন ক্লাবগুলো পাবে না?
৬) কেন পৈলান অ্যাকাডেমির পিছনে এত টাকা খরচ করা হল?
শুধু এ সব প্রশ্ন তোলাই নয়, ক্লাবগুলো আকারে ইঙ্গিতে অন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, আই লিগের জন্যই ফেডারেশন স্পনসরদের কাছে টাকা পায়। লিগের জন্য প্রাপ্ত সেই টাকা অন্য খাতে খরচ হবে কেন? কলকাতার এক ক্লাব কর্তা ব্যঙ্গ করে বলেন, “কার্যকরী কমিটির অনেক কর্তার রাজ্যে ফুটবলই হয় না। তাদের এক জনকে প্রশ্ন করেছিলাম, ফুটবল নিয়ে সভায় আসেন কেন? উনি স্পষ্ট বলেন, ‘সভায় এলে টাকা পাওয়া যায়, তাই আসি’। এরা আই লিগের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে কেন?” আই এম জি কর্তাদের বিরুদ্ধেও ক্লাবগুলো তির ছোঁড়ে, “যদি কলকাতায় সি এম জি প্রিমিয়ার লিগ সকারের জন্য এত স্পনসর জোগাড় করতে পারে, আপনারা ভারতীয় ফুটবলে পারেন না কেন? ভারতের ক্লাবগুলো ১৫০ কোটি টাকা খরচ করে, আপনারা ৩৫ কোটি বিনিয়োগ করেন। ক্লাবগুলোকে অবজ্ঞা করে কিছু করা যাবে না।”
ক্লাব কর্তাদের অনেকের ধারণা, তাঁদের ঐক্য ভাঙার চেষ্টায় ফেডারেশনের কর্তারা। তাই ওই সভার পরেও নিজেরা বৈঠক করেন তাঁরা। এখন দেখার, তাদের পরের লক্ষ্য কারা দাঁড়ায়এ আই এফ এফ না আই এম জি। |
|
|
|
|
|