নিজস্ব সংবাদদাতা • বেগমপুর |
একই দাবিতে ট্রেন অবরোধ। সোমবার সকাল থেকে টানা ৯ ঘণ্টা অবরোধের জেরে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়ার পরে হুগলির বারুইপাড়ায় লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের তুলতে হয়েছিল পুলিশকে। মঙ্গলবার অবশ্য সেই প্রয়োজন হল না। ‘বিরক্ত’ নিত্যযাত্রী ও গ্রামবাসীর একাংশের প্রতিবাদের সামনে বেগমপুর স্টেশনে পিছু হঠল অবরোধকারীরা।
ঘটনার পরে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “২৮ মিনিট অবরোধ ছিল। সে জন্য দু’টি ট্রেন ২০ মিনিট দেরিতে চলেছে। স্থানীয় মানুষ এবং যাত্রীদের প্রতিরোধে এ দিন অবরোধ উঠেছে বলে খবর পেয়েছি। ওঁদের ভূমিকা প্রশংসনীয়।”
এর আগে বামনগাছিতে অসুস্থ সন্তানকে কোলে নিয়ে বেপরোয়া বাবা একাই প্রতিবাদ করেছিলেন ট্রেন অবরোধের। সে বার অবরোধ তুলতে বাধ্য হয়েছিল রাজনৈতিক একটি দল। বসিরহাটেও এক মহিলা যাত্রীর প্রতিবাদের সামনে পড়ে পিছু হঠতে হয়েছিল ট্রেন অবরোধকারীদের। মঙ্গলবার তেমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল হুগলির বেগমপুর।
হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখায় বারুইপাড়া লোকালের যাত্রাপথ গুড়াপ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার দিনভর ট্রেন আটকে দেওয়া হয় বারুইপাড়া স্টেশনে। ওই ঘটনার জেরে এ দিন বারুইপাড়া স্টেশনে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। সে কারণে, একই দাবিতে এ দিন অবরোধ হয় বেগমপুরে। রেল সূত্রের খবর, ডাউন গুড়াপ লোকাল সকাল ৮টা নাগাদ বেগমপুরে ঢুকতেই বারুইপাড়ার এক দল নিত্যযাত্রী রেললাইনে নেমে পড়েন। তাঁরা ওই লোকাল ট্রেনের গার্ড এবং চালককে জোর করে নামিয়ে নেন বলে অভিযোগ। ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর পরেই রুখে দাঁড়ান অন্য যাত্রীরা। নিত্যযাত্রীদের একাংশ অবরোধকারীদের ‘হুঁশিয়ারি’ দেন, এ ভাবে প্রত্যেক দিন অবরোধ করলে ‘কাজের ক্ষতি’ হচ্ছে। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে চলে এসেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাও অবরোধ তুলে নিতে বলেন। সমবেত প্রতিবাদের সামনে ঝুঁকি নেয়নি অবরোধকারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ট্রেন চালু হয়ে যায়। রেল পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবারের অবরোধের ঘটনায় ২২ জনকে ধরা হয়েছিল। মঙ্গলবার চন্দননগর আদালতে হাজির করানো হলে তাঁদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। |