নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁকরাইল |
উলুবেড়িয়ার পরে এ বারে সাঁকরাইলের নলপুর। ফের দরজার তালা ভেঙে ডাকাতির ঘটনা ঘটল। গত শুক্রবার রাতে একই ভাবে ডাকাতি হয়েছিল উলুবেড়িয়ার জগদীশপুর গ্রামে। ওই ঘটনায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রামবাসীদের সহায়তায় ডাকাতদের ধরে ফেলে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় লুঠের মালও। কিন্তু সোমবার রাতে নলপুরের ঘটনায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে সোমবার রাত ২টো নাগাদ এক দল দুষ্কৃতী প্রধান দরজার তালা ভেঙে ঢুকে পড়ে মোহনচন্দ্র নস্করের বাড়িতে। নলপুর রেল স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে একটি মাঠের ধারে বাড়ি মোহনবাবুর। পেশায় দলিল লেখক মোহনবাবু শুয়েছিলেন তাঁর ঘরে। পাশের ঘরে স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন মোহনবাবুর ছেলে রুদ্রবাবু। তিনিও পেশায় দলিল লেখক। |
তছনছ হয়ে পড়ে থাকা ঘর। নিজস্ব চিত্র। |
রুদ্রবাবুর ঘরের দরজাটি খোলাই ছিল। ফলে তাঁর ঘরে বিনা প্রতিরোধেই ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। তাদের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র এবং ভোজালি। রুদ্রবাবু বলেন, “আমাকে ভয় দেখিয়ে তারা আলমারির চাবি নেয়। আলমারি ভিতর থেকে সোনার গয়না এবং বেশ কয়েক হাজার নগদ টাকা তারা নিয়ে নেয়।” অন্য দিকে মোহনবাবু বলেন, “পাশে ছেলের ঘরে গোলমালের শব্দ শুনে আমি নিজের ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে দেখতে আসি কী হয়েছে। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে জনা চারেক দুষ্কৃতী আমার ঘরের ভিতরে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে।” তাঁকে একটি লোহার রড দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। মোহনবাবু বলেন, “আমার গলায় সোনার হার ছিল। হাতেও ছিল সোনার আংটি। সব কিছু তারা নিয়ে নেয়। আমার স্ত্রীর গা থেকেও সব সোনার গয়না খুলে নেয় তারা। এরপরে তারা আমার কাছ থেকে আলমারির চাবি চায়। কিন্তু আমি তাদের বলি আলমারির চাবি রয়েছে বড় ছেলের কাছে। সে এখানে থাকে না।” এই কথা শুনে তারা লোহার রড দিয়ে আলমারির হাতল ভাঙতে চেষ্টা করে বলে জানান মোহনবাবু। তবে আলমারি তারা খুলতে পারেনি।
মোহনবাবু এবং তাঁর ছেলে জানান, দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় ছিল ৮-১০ জন। দু’জন গামছায় মাথা ঢেকে ছিল। লুঠপাট চালিয়ে তারা মোহনবাবু, তাঁর স্ত্রী, ছেলে, বৌমা এবং নাতিকে একটি ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে ছিটকিনি তুলে দিয়ে চলে যায়। মোহনবাবু বলেন, “আমার ছেলে এবং বৌমার মোবাইল ফোন দু’টিও তারা নিয়ে নেয়। আমারটি তারা নিতে পারেনি। ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পরে আমি ওই মোবাইল থেকে পরিচিতদের খবর দিই। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ আসে।” |