আরামবাগে একশো দিনের কাজ
মজুরি নিয়ে বিভ্রান্তি, অশান্তি দুই পঞ্চায়েতে
কশো দিনের কাজে গতি আনতে প্রকল্পের খুঁটিনাটি তথ্য গ্রামবাসীদের সামনে তুলে ধরতে মাস দু’য়েক ধরে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালিয়েছিল হুগলি জেলা প্রশাসন। তাতে অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন অবশ্য হয়নি। ‘মজুরির ধরন’ নিয়ে অধিকাংশ পঞ্চায়েতে অশান্তি লেগেই আছে।
মঙ্গলবার আরামবাগ ব্লকের গৌরহাটি ১ এবং গোঘাট ২ ব্লকের হাজিপুর পঞ্চায়েতে গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। হাজিপুরে শুধু ঘেরাও বিক্ষোভ হলেও গৌরহাটি ১-এর ক্ষেত্রে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা কার্যত তাড়া করেন নির্মাণ সহায়ককে। পরে পঞ্চায়েতে ঘেরাও করা হয়। সেই সঙ্গে গালিগালাজ করা হয় বলেও অভিযোগ। পঞ্চায়েত ভবনের সামনে খালোড়-আরামবাগ রাস্তাটিও আধ ঘণ্টার জন্য অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। দু’টি ক্ষেত্রেই পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। শ্রমিকদের অভিযোগ ছিল, সরকার নির্ধারিত সঠিক মজুরি হল ১৩০ টাকা, যা তাঁদের দেওয়া হচ্ছে না। দু’টি ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের প্রশাসনের তরফে বোঝানোর চেষ্টা হয়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কাজের পরিমাণ দেখেই মজুরি দেওয়া হবে।
এই ব্যবস্থা ‘কঠোর ভাবেই’ শ্রমিকদের এ বিষয়টি মেনে চলতে হবে। আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “শ্রমিকদের বলে দেওয়া হয়েছে, কাজের মাপ অনুযায়ী মজুরি দেওয়া হবে। এটা মানতেই হবে। না হলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
হাজিপুর পঞ্চায়েতে এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বিভিন্ন গ্রামের শ্রমিকেরা এসে ঘেরাও শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, এমনিতেই সময় মতো মজুরি মেলে না। তার উপরে দেখা যায়, কখনও কখনও মজুরি পাওয়া যাচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। শ্রমিকদের দাবি, মজুরি পাওয়ার কথা দৈনিক ১৩০ টাকা। বাকি টাকাটা নিয়ে দুর্নীতি করছে পঞ্চায়েত। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের প্রধান মন্টু সাঁতরা এবং নির্মাণ সহায়ক প্রশান্ত বিশ্বাসের বক্তব্য, “গত বছর ডিসেম্বর মাস থেকে একশো দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় প্রচার চলছে। সচেতনতা শিবির চালানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও মজুরি নিয়ে অশান্তি বাধছে। এ সবের জেরে প্রকল্পের স্বাভাবিক গতি থমকে যাচ্ছে।” শ্রমিকেরা তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ করছেন বলেও দাবি মন্টুবাবুদের। বিডিওকে সমস্যার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট বিডিও অনির্বাণ সোম বলেন, “প্রকল্পটি নিয়ে শ্রমিকদের সচেতন করার চেষ্টা লাগাতার করা হচ্ছে।” মজুরি পেতে দেরি হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
অন্য দিকে, গৌরহাটি ১ পঞ্চায়েতে গোলমালের সূত্রপাত এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। স্থানীয় পইসারা গ্রামে একটি পুকুর কাটার কাজ দেখতে যান পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক পার্থ নন্দী। শ্রমিকদের অভিযোগ, সপ্তাহ খানেক আগে যে কাজ হয়েছে, তা পরিমাপ করে তিনি জানান, এ জন্য মাথা-পিছু দৈনিক ২০-৩০ টাকা মজুরি মিলবে। এই শুনেই শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁরা তাড়া করেন পার্থবাবুকে। তিনি ছুটে ঢুকে পড়েন পঞ্চায়েত। সেখানে শুরু হয় ঘেরাও। পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা আসেন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, যেখানে ৫০ সিএফটি মাটি কাটলে ১৩০ টাকা মেলে, সেখানে শ্রমিকেরা ১০ সিএফটি মাটি কেটেই পুরো মজুরি চাইছেন। পার্থবাবুর কথায়, “শ্রমিকদের অবশেষে বিষয়টি বোঝানো গিয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.