সল্টলেকের করুণাময়ীতে সরকারি জমি জবরদখল করে গড়ে উঠেছিল ‘সিন্ডিকেট’। খবর পেয়ে পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে সেই জমি উদ্ধার করেছেন ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিমবঙ্গ কৃষিজাত শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই সরকারি সংস্থার প্রায় ২৩ কাঠা জমি সল্টলেকের করুণাময়ীর দু’নম্বর সেক্টরে দীর্ঘ ১২ বছর ফাঁকা পড়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি রাজীববাবুকে ওই সংস্থার চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করেন। দায়িত্ব পেয়ে সংস্থাটির কোথায় কী রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে রাজীববাবুর নজরে পড়ে করুণাময়ীর ওই জমিটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এর পরে নিগমের অধিকারিকদের নিয়ে মঙ্গলবার তিনি জমিটি দেখতে যান। রাজীববাবুর অভিযোগ, “সেখানে গিয়ে আমরা দেখি, জমির পাঁচিল ভাঙা। চুন, সুরকি, বালির বস্তা ডাঁই করে ফেলা রয়েছে বিশাল ওই জমিতে। একটি ছোট ব্যায়ামাগার রয়েছে। পানশালাও বানানো হয়েছে দেখলাম!” |
উদ্ধার হওয়া জমিতে চলছে পাঁচিল তোলার কাজ। মঙ্গলবার, করুণাময়ীতে। |
তাঁরা বিধাননগর পূর্ব থানায় খবর দেন। থানার ওসি শেখর রায়ের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুই যুবককে আটক করে। পুলিশ সূত্রের খবর, আটক হওয়া যুবকেরা সঙ্গে সঙ্গে মালপত্র সরিয়ে জমিটি ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। রাজীববাবু জানিয়েছেন, তাঁরা জমি উদ্ধার করে রাতারাতি সেখানে নতুন করে পাঁচিলও তুলে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “প্রায় ১২ বছর ওই জমি জবরদখল করে একটি সিন্ডিকেট ব্যবসা চালাত।” সেই সিন্ডিকেট কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় চলত, তা অবশ্য রাজীববাবু স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। সল্টলেকে পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সেখানে কোন সিন্ডিকেট চলত, তা আমরা জানি না। তবে আটক হওয়া দুই যুবক জেরায় জানিয়েছেন যে, দীর্ঘ দিন ওই জমি ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখে ওঁরা চুন, সুরকি বালি রাখতেন। কিন্তু এক কথায় জমিটি ছেড়ে দেওয়ায় আমরাও ওঁদের ছেড়ে দিয়েছি।”
এখন ওই জমিটি সরকারি সংস্থা কী ভাবে ব্যবহার করবে, বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনার পরে তা রাজীববাবুরা ঠিক করবেন। রাজীববাবু বলেন, “রাজ্যে ১৯টি জেলায় আমাদের নিগমের পরিকাঠামো গড়ে তোলা এবং পিপিপি মডেলে ফুড-ফ্রুট প্রসেসিং ইউনিট, কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন কারখানা গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। করুণাময়ীর জমিটি কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে, তা বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” প্রসঙ্গত, তেজপাতা ও আমলকীর মতো সামগ্রী বিদেশে রফতানির জন্য উদ্যোগী হয়েছে নিগম। মালয়েশিয়ার এক সংস্থার সঙ্গেও যৌথ উদ্যোগে পাম অয়েল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাজীববাবুর কথায়, “আমাদের লক্ষ্য এই নিগমকে সক্রিয় করে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।” |