যত শীঘ্র সম্ভব কলকাতা থেকে উড়ান পরিষেবা স্বাভাবিক করতে কিংফিশারকে চাপ দিল ভারতের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)।
মঙ্গলবার কিংফিশারের তরফে কলকাতা থেকে ঢাকা রুটে উড়ান চালানো হয়েছে। ৬৬ আসনের বিমানে গিয়েছেন ৩০ জন যাত্রী। ফিরেছেন তার অর্ধেক। বুধবারও ঢাকা উড়ান চলবে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। তার সঙ্গে বুধবার কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বরে দু’টি উড়ান এবং বাগডোগরায় একটি উড়ান যাতায়াত করবে বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিন দিল্লিতে ডিজিসিএ-র ডিরেক্টর ভরত ভূষণের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিমানসংস্থার সিইও সঞ্জয় অগ্রবাল। কিংফিশারের কর্তাকে কার্যত জবাবদিহির জন্যই ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কী অবস্থায় আচমকা তারা কলকাতা থেকে সমস্ত উড়ান তুলে নিয়েছিল, তার কারণ জানতে চাওয়া হয়।
ডিজিসিএ সূত্রের খবর, ভরত ভূষণ সরাসরি বিমানসংস্থার কর্তাদের অবিলম্বে কলকাতা থেকে উড়ান পরিষেবা শুরু করার কথা বলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিমান মন্ত্রককে যে রিপোর্ট ভরত ভূষণ পাঠিয়েছেন, সেখানেও তিনি কলকাতার উড়ান পরিষেবার বিষয়টি আলাদা করে উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, “সরকার চায় ওই অঞ্চলের (কলকাতা ও উত্তর-পূর্ব ভারত) উড়ান পরিষেবা যেন বিঘ্নিত না হয়।”
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে আন্তর্জাতিক রুটে ঢাকা ও ব্যাঙ্ককে নিয়মিত উড়ান চালাচ্ছিল কিংফিশার। এ ছাড়াও ভুবনেশ্বর ও দিল্লিতে দিনে দু’টি করে, মুম্বই-বাগডোগরা (অথবা আইজল)-এ একটি করে উড়ান চালাচ্ছিল তারা। সংস্থা সূত্রে খবর, আপাতত ছোট এটিআর বিমান দিয়ে যতগুলি রুটে সম্ভব উড়ান পরিষেবা শুরু হবে। ২৯ তারিখের মধ্যে দিল্লি-মুম্বইয়েও উড়ান পরিষেবা শুরু করে দেওয়া হবে।
উড়ান বাতিল করলেও সে সংক্রান্ত খবর যাত্রীদের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলেও এ দিন ভরত ভূষণ অভিযোগ করেন। কেন সঠিক সময়ে কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না, ওঠে সেই প্রশ্নও। ২৮টি বিমান নিয়ে যেখানে দিনে ১৭৫টি উড়ান চালানো সম্ভব, সেখানে কলকাতার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে কেন সমস্ত উড়ান তুলে নেওয়া হল, তা-ও জানতে চাওয়া হয় এ দিন। ডিজিসিএ সূত্রে খবর, কিংফিশারের তরফে সন্তোষজনক জবাব পাওয়া যায়নি। তাই বুধবারের মধ্যে সংস্থার কর্তাদের নতুন করে উড়ানসূচি জমা দিতে বলা হয়েছে। ভরত ভূষণ বলেন, “কড়া শাস্তি দিয়ে বিমানসংস্থাকে আরও বিপদে ফেলে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা চাই, বিমানসংস্থা চলুক। তাতে সুবিধা হবে যাত্রীদের। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় তা দেখা জরুরি।”
ডিরেক্টর জেনারেলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইও সঞ্জয় অগ্রবাল বলেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা উড়ান পরিষেবা স্বাভাবিক করতে পারব বলে আশা করছি। মার্চের মধ্যে কর্মীদের বেতনও মিটিয়ে দেওয়া হবে।” তবে সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই ৩৪ জন পাইলট পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বেশ কিছু বিমানসেবিকা ও গ্রাউন্ড-অফিসার লম্বা ছুটি নিয়ে অন্য সংস্থায় চাকরি খুঁজতে শুরু করে দিয়েছেন। |