লজের ঘরে জোর করে ঢুকে স্বামীর সামনেই এক মাঝবয়সী মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সিউড়ি শহরে ঘটনাটি ঘটলেও পুলিশের কাছে মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই মহিলার স্বামী কাজি আনোয়ার আহমেদ।
বীরভূমের পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। বিষয়টি ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি)-কে দেখতে বলেছি। ইতিমধ্যেই লজের কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবকের খোঁজ চলছে।” মহম্মদবাজারের বিরাজপুর গ্রামের বাসিন্দা ৭২ বছরের কাজি আনোয়ার ১৭ তারিখ সিউড়িতে তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন। দেরি হতে পারে ভেবে বাসস্ট্যান্ড চত্বরের একটি লজে ঘর ভাড়া করেন। লিখিত অভিযোগে ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সিউড়ি থানার কুখুডিহি গ্রামের বছর তিরিশেকের যুবক জাকির নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে। তিনি দরজা না খোলায় সে দরজায় লাথি মারে। ছিটকিনি খুলে যেতেই ওই ‘নেশাগ্রস্ত’ যুবক ভিতরে ঢুকে হম্বিতম্বি শুরু করে। |
তাঁর স্ত্রীর খোঁজ করতে থাকে। সিউড়ি আদালতের মুহুরি আনোয়ারের অভিযোগ, “আমার স্ত্রী শৌচাগারে ছিলেন। ওই দরজাতেও জাকির ধাক্কা মারে। স্ত্রী আওয়াজ শুনে বেরোতেই ওই যুবক তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করে। আমি বাধা দিতে গেলে ওর সঙ্গে আমার ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। স্ত্রী-ও মগ দিয়ে ওকে মারতে থাকে।”
ইতিমধ্যে চেঁচামেচি শুনে তিন-চার জন যুবক সেখানে চলে আসেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা জিয়াউল হক। ওই বৃদ্ধ লজের কেয়ারটেকার নীলমনি সেনকেও ডেকে আনেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, জিয়াউল ও নীলমনিবাবু জাকিরকে ধমকধামক দেন। জিয়াউলের চাপে ওই দম্পতির কাছে ক্ষমাও চায় জাকির। এর পরে তাকে লজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। কাজি আনোয়ারের দাবি, জাকির তখন জানায়, ‘উপর মহলে’ তার পরিচিতি আছে। বৃদ্ধ বলেন, “ও এ রকম বলায় আমি ভয়ে আর থানায় যাইনি। ভেবেছিলাম, পুলিশ হয়তো কোনও ব্যবস্থা নেবে না।” এ দিন অবশ্য পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলার পরে সিউড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কাজি আনোয়ার। কাজি আনোয়ারের স্ত্রী বছর ৪৮-এর ওই মহিলা বলেন, “যে যুবক এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তার উপযুক্ত শাস্তি চাই।”
জিয়াউল হক বলেন, “ওই কাণ্ড দেখে আমি ছেলেটাকে দম্পতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছিলাম।” |