দীর্ঘদিনের দাবি মেনে চালু হল শিয়ালদহ-জঙ্গিপুর নতুন প্যাসেঞ্জার। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের প্রত্যাশা পূরণ হল না।
মঙ্গলবার তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে তিনটি স্টেশনে রেল অবরোধ এবং জঙ্গিপুরে যাত্রী বিক্ষোভে। পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের আজিমগঞ্জ-কাটোয়া শাখায় হাওড়া-মালদহ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস-সহ কয়েকটি ট্রেন বেশ কিছু ক্ষণের জন্য আটকে থাকে। যাত্রীরা নাকাল হন।
শিয়ালদহ থেকে কোথাও না থেমে সোজা বর্ধমানের কাটোয়ায় যাওয়ার কথা ট্রেনটির। তার পরে জঙ্গিপুর পর্যন্ত ২০টি স্টেশনের মধ্যে ১০টিতে থেমে পৌঁছবে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের দাবি, অন্তত শিবলুন, বহড়ান, কাজিপাড়া, জীবন্তী ও মিয়াঁগ্রামে ট্রেন দাঁড় করাতে হবে। মঙ্গলবার সকালে শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে সাড়ে সাত ঘণ্টা পরে জঙ্গিপুর স্টেশনে পৌঁছনোর কথা ছিল ট্রেনটির। কিন্তু অবরোধের কারণে প্রথম দিনেই যাত্রা বিলম্বিত হয়। |
প্রথমে সকাল ৯টা নাগাদ বর্ধমানের শিবলুন স্টেশনে ট্রেন আটকান নিত্যযাত্রী সংগঠন বিবি লুপ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা। পরে মুর্শিদাবাদের জীবন্তী ও মিয়াঁ স্টেশনে ট্রেনটিকে আটকানো হয়। ট্রেনের যাত্রীরা অধৈর্য হয়ে পড়েন। কাটোয়ার অভিজিৎ ভট্টাচার্য, সুভাষ ভট্টাচার্য, মৌসুমী চন্দ্রদের অভিযোগ, “অবরোধকারীদের নিরস্ত হতে বললে তাঁরা উল্টে দুর্ব্যবহার করেন।” নিত্যযাত্রী সংগঠনের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, কেউ দুর্ব্যবহার করেননি। যাত্রীদের ‘বুঝিয়ে’ বলা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের সালারে অবশ্য ব্যান্ড বাজিয়ে, ফুলের মালায় সাজিয়ে নতুন ট্রেনকে স্বাগত জানান নিত্যযাত্রীরা। কিন্তু দুপুর ১টা নাগাদ জঙ্গিপুরে পৌঁছেই ট্রেনটি ফের বিক্ষোভের মুখে পড়ে। ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তনের দাবিতে ব্যবসায়ী সমিতি কালো পতাকা নিয়ে, মাইক বাজিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। নাগরিক মঞ্চের তরফেও সামিল হন প্রচুর মানুষ। এর মধ্যেই এক দল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ট্রেনটিকে স্বাগত জানাতে এলে উত্তেজনা ছড়ায়। তবে প্রচুর রেলপুলিশ ও রাজ্য পুলিশ থাকায় অশান্তি হয়নি। মিনিট কুড়ি পরে বিক্ষোভ থামে।
ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, ট্রেনটি সকালে জঙ্গিপুর থেকে ছাড়া হোক, রাতে শিয়ালদহ থেকে। তা হলে মানুষ কলকাতা গিয়ে এক দিনে কাজ সেরে ফিরতে পারবেন। জঙ্গিপুর থেকে দুপরে ট্রেন ছাড়লে লাভ হবে না। বিক্ষোভের খবর পেয়ে মালদহ থেকে সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আর এম তাম্বে জঙ্গিপুর স্টেশনে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। কাল, বৃহস্পতিবার পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন বলে রেল সূত্রের খবর। |