আবর্জনার মাঝে খেলতে গিয়ে বোমা ফেটে গুরুতর জখম হল এক বালিকা। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুরের রাঁচি কলোনিতে। পুলিশ জানিয়েছে, সাত বছরের ওই বালিকার নাম কুমকুম ডোম। সে স্থানীয় একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড এবং গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা মাঠে খেলছিল কুমকুম। পাশেই একটি আবর্জনা ফেলার জায়গা রয়েছে। সেখান থেকে প্লাস্টিকের প্যাকেট হাওয়ায় উড়ে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। এ দিন তেমনই কয়েকটি প্যাকেট নিয়ে খেলছিল কুমকুম। একটি প্যাকেটের মধ্যে থাকা বোমাটি ফেটে যায়। আওয়াজ শুনে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসেন। মাঠে তখন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছে কুমকুম। পুলিশকে খবর দেন বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ছুটে আসেন কুমকুমের বাবা, একটি হোটেলের কর্মী বাদল ডোম। পুলিশ কুমকুমকে উদ্ধার করে মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসকেরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন তাকে।
হঠাৎ এমন একটি ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই কলোনিতে গিয়ে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে জটলা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় দুষ্কৃতীরা আসা-যাওয়া রয়েছে। তারাই কোনও কারণে বোমাটি মাঠে ফেলে গিয়েছে। অবিলম্বে রাতে পুলিশি টহলের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। কুমকুমের বাড়িতে পড়শি ও পরিজনের ভিড়। তার মা মীনাদেবী বলেন, “আমাদের একমাত্র সন্তান ও। ওর কিছু হয়ে গেলে আমারা কী ভাবে বাঁচব?” বাদলবাবু জানান, আর্থিক অনটনের মধ্যেও মেয়েকে পড়াশোনা শেখাচ্ছেন। তিনি বলেন, “মাঝে মাঝেই ওই মাঠে কুমকুম খেলাধুলো করে। হঠাৎ এমন হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি।”
বিকেলে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের কর্মীরা ঘটনাস্থলে তদন্তে যান। সেখানে পৌঁছন গোয়েন্দা বিভাগের লোকজনও। তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। দুষ্কৃতীদের আনাগোনার কথা তাঁদের জানান বাসিন্দারা। পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, কী ভাবে বোমাটি ওই জায়গায় এল, পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে। |