কমিশনারেটের ভূমিকা কী, উঠছে প্রশ্ন
পাত শান্ত দুর্গাপুরে আশঙ্কার বোমা ফাটাল রাঁচি কলোনি।
আশঙ্কাটা ছিলই। বেনাচিতি থেকে সিটি সেন্টার, বহু জায়গাতেই বহু সময়ে সন্দেহজনক লোকজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন এলাকার লোকজন। উন্নয়নের পাশাপাশি সমাজবিরোধী কার্যকলাপও বাড়ছে, এই অভিযোগও উঠছিল।
এই পরিস্থিতিতেই নতুন আশা জাগিয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর চালু হয়েছিল আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। নতুন ব্যবস্থায় নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়বে, রাস্তাঘাটে শিশুদের চলাফেরা আরও সুরক্ষিত হবে, আগের চেয়ে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন অশক্ত ও বৃদ্ধেরাএমনটাই আশা করেছিলেন অনেকে। ছ’মাসের মাথায় রাঁচি কলোনির ঘটনা সেই কমিশনারেটের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
মঙ্গলবার দুর্গাপুরের রাঁচি কলোনিতে আবজর্নার প্লাস্টিকের মধ্যে থাকা বোমা ফেটে জখম হয় কুমকুম ডোম। স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ, এলাকায় নিয়মিত দুষ্কৃতীদের আনাগোনা রয়েছে। বারবার জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কমিশনারেট এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এ দিন ঘটনার পরে খবর দিলেও পুলিশ দেরিতে পৌঁছয় বলে অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে চায়নি।
রাঁচি কলোনিতে ঘটনাস্থলে বম্ব স্কোয়াড। নিজস্ব চিত্র।
গত সেপ্টেম্বরে গঠিত হয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট। দুর্গাপুরে এর মধ্যে অপরাধমূলক কাজকর্ম তেমন না ঘটলেও শহরের বিভিন্ন জায়গায় দুষ্কৃতী আনাগোনার প্রমাণ মিলেছে। গত ২২ অক্টোবর এ-জোনের আশিস মার্কেট সংলগ্ন একটি স্কুলের পাশে জঙ্গল থেকে ১২টি তাজা বোমা উদ্ধার হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা বোমাগুলি দেখতে পান। কে বা কারা কী উদ্দেশে ওই বোমাগুলি রেখে গিয়েছিল, তার হদিস করতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দুষ্কৃতীরা এই শহরে নিরাপদে অস্ত্রশস্ত্রের হাতবদল করে থাকে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির পিছন দিকে রয়েছে রাঁচি কলোনি। মূলত বাইরে থেকে আসা দুঃস্থ মানুষজন এই কলোনিতে বাস করেন। আর্থিক অনটনের কারণে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশকে প্রলোভন দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা নিজেদের কাজে লাগায় বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন বাসিন্দার অভিযোগ, রাতে দুষ্কৃতীরা এখানে ডেরা বাঁধে। প্রতিবাদ করলে হুমকি দেওয়া হয়। ফলে সবাই মুখ বুজে থাকে। তাঁদের দাবি, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করে দুষ্কৃতীরা। এ দিন যে বোমাটি ফেটেছে, সেটি তারাই এনেছিল। কোনও কারণে সেটি রাস্তায় পড়ে যায়। অসাবধানে কুমকুম লাথি মারলে সেটি ফেটে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই বালিকা এখন হাসপাতালে ভর্তি।
এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, এ দিন বোমা ফাটার খবর পাওয়ার অনেক পরে পুলিশ পৌঁছয়। এমনকী প্রথম দিকে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্বও দিতে চায়নি পুলিশ। বাসিন্দাদের আবেদনে পুলিশকর্মীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জখম বালিকাকে হাসপাতালে পাঠানোর উদ্যোগ হয়। ঘটনাস্থলে যান পুলিশ আধিকারিকেরা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রকাশ পাল, সোমেশ্বর সাউরা বলেন, “বোমা ফাটার খবরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। কিন্তু তাতে পুলিশের কোনও হেলদোল নজরে পড়েনি। মাস ছয়েক আগে যখন পুলিশ কমিশনারেট গঠন হয়, তখন আমরা ভেবেছিলাম এ বার পুলিশের কাজকর্মে গতি আসবে। কিন্তু আদতে তা কিছুই হয়নি।”
পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ অবশ্য বাসিন্দাদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি বলেন, “ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ গিয়েছিল। দ্রুত জখম বালিকাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড ও গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীরা এলাকায় গিয়ে তদন্ত করেন।” তাঁর দাবি, শহরবাসী যাতে নিরাপদে থাকতে পারেন সে জন্য পুলিশকর্মীরা সর্বত্র নজর রাখছেন।
সেই নজরে কতটা লাভ হচ্ছে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় থাকছেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.