চিকিৎসকের প্যাড ব্যবহার করে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক ওষুধ দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে রামপুরহাটের ভাড়শালামোড় সংলগ্ন ওই ওষুধ দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হলেন ঝাড়খণ্ডের হিরণপুর থানার শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা বাসু পাহাড়িয়া। ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক মহম্মদ ইব্রাহিম বলেন, “মৌখিক ভাবে শুনেছিলাম শহরে এ রকম স্বাস্থ্য পরিষেবার নামে ব্যবসা চলছে। এ দিন অভিযোগ পাওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলব।” পাশাপাশি চিকশাচালকদের বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন মহম্মদ ইব্রাহিম। মহকুমা সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দায়িত্বে থাকা রামপুরহাট হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদার বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে অভিযোগ জমা পড়লে বা প্রশাসনিক ভাবে আমি জানতে পারলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
এ দিকে, পাশের যে প্যাথলজি বিভাগে রক্ত পরীক্ষা করার জন্য ওই ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছিল, সেখানে এন ইসলামের নামে অনেকগুলি বিল দেখতে পাওয়া যায়। এক জন ভুযো চিকিৎসকের নামে রোগীদের বিল দেওয়া হচ্ছে কেন? সে ব্যাপারে সদুত্তর মেলেনি। ওই সেন্টারের মালিক সমীর রায় শুধু বলেন, “একটু দেখে নেবেন।”
শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা বাসু পাহাড়িয়া বলেন, “এ দিন সকালে রামপুরহাট স্টেশন থেকে হেঁটে ব্যাঙ্করোড সংলগ্ন এক চিকিৎসকের কাছে যাই। সেখানে জানতে পারি, ওই চিকিৎসকের চেম্বার দেড় মাস ধরে বন্ধ। তখন এক রিকশাচালক ভাড়শালামোড়ে অন্য এক চিকিৎসকের কথা বলেন। তাঁর কথা মতো সেখানে যাই।” তাঁর অভিযোগ, “এন ইসলাম নামে ওই ব্যক্তি অন্য এক চিকিৎসকের প্যাডে ওষুধ লিখে রক্ত পরীক্ষা করতে বলেন। আমার কাছ থেকে ১১০০ টাকা নেওয়াও হয়। বাইরে আসতেই এক জন আমাকে বললেন, ‘তোমাকে ভুয়ো চিকিৎসক দেখেছেন’। সে কথা বলতেই আরও অনেকে জড়ো হন। তখন ওই ওষুধ দোকানের মালিক এন ইসলাম আমাকে ওষুধ ফেরত দিতে বলে টাকা ফিরিয়ে দেন।”
এন ইসলাম নামে ওই ভুয়ো চিকিৎসক সুব্রত মুখোপাধ্যায় নামে অন্য চিকিৎসকের প্যাড ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ। সুব্রতবাবু চোখের ডাক্তার। রেলের চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসর নিয়েছেন। চার দিন ধরে ওখানে তিনি রোগী দেখছেন। এ দিন চার জন রোগী দেখেছেন। সুব্রতবাবুর দাবি, “বৈদ্যুতিন মাধ্যমে যাঁর প্রেসক্রিপশন দেখানো হচ্ছে, সেটা আমার লেখা নয়।” তিনি বলেন, “কেউ যদি আমার প্যাড ব্যবহার করে থাকে, তা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।” যদিও অভিযুক্ত ব্যক্তি এন ইসলাম ওরফে নুরুল ইসলামের দাবি, “আমি ওই সময় দোকানে ছিলাম না। সুব্রত মুখোপাধ্যায় রোগী দেখেছেন। সেই মতো কর্মচারীরা ওষুধ দিয়েছেন। পরবর্তীতে ওই রোগী তাঁর ওষুধ প্রয়োজন নেই বলেন। তখন টাকা ফেরত দিয়ে ওষুধ নিয়ে নেওয়া হয়েছে।” বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রামপুরহাট শাখার সম্পাদক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখা হবে। ওই দোকানের মালিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” |