দেড়শো ফুট চওড়া খাল। তার উপরে বাঁশের নড়বড়ে সেতু। তবু সেটাই পারাপারের একমাত্র উপায়। প্রতিদিন স্থানীয় কচিকাঁচা থেকে বৃদ্ধ, বৃদ্ধা সকলকেই এ ভাবে খাল পার হতে হয়। বর্ষায় খাল টইটম্বুর হয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। বাঁশের সেতুর পরিবর্তে চওড়া পাটাতনের সেতু বা পাকা সেতুর জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন বাসিন্দারা। কিন্তু তাতে প্রশাসনের কোনও নজরই নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির গাজিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ছামনামুনি গ্রামের কাছে সিদ্ধিবেড়িয়া খালের উপরে পারাপারের জন্য এক সময় পাকা সেতু ছিল। বছর কুড়ি আগে তা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। তার পরেই পঞ্চায়েত থেকে বাঁশের সরু সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় মানুষের আশা ছিল, পরে ফের পাকা সেতু তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও ওই সরু সাঁকো দিয়েই বাসিন্দাদের পারাপার করতে হচ্ছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, সরু ওই সাঁকো দিয়ে চোট ছেলেমেয়ে থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের প্রাণ হাতে করে পারাপার করতে হয়। |
দিনের বেলায় কোনওরকমে পারাপার করা গেলেও রাতের অন্ধকারে পারাপারের প্রয়োজন হলে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। পঞ্চায়েতকে বার বার বলেও কোনও সুরাহা হয়নি। প্রশাসনের কাছে সাধারণ মানুষের জীবনের বোধহয় কোনও দাম নেই। স্থানীয় বাসিন্দা রহমত লস্কর, মিজানুর রহমানের জানালেন, খালের ওপারে প্রায় ১০০ পরিবার বাস করেন। তাঁদের পানীয় জল সংগ্রহ করতে হলে সাঁকো পার হয়ে এ পারে আসতে হয়। তা ছাড়া স্থানীয় ১৫-২০টি গ্রামের মানুষ ওই সাঁকো পেরিয়ে কুলপি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়।া আসা করতে হয়। অন্যথায় অনেক ঘুরপথে যেতে হবে। এই অবস্থায় সাঁকোর বদলে কাঠের পাটাতনের চওড়া সেতু বা পাকা সেতু তৈরি হলে খুবই উপকার হয় মানুষের। গ্রামবাসীদের দাবি, ভোট এলেই সব রাজনৈতিক দলের নেতা এসে প্রতিশ্রুতি দেন সেতু করে দেওয়া হবে। কিন্তু বোটের পরে তাঁদের দেখা মেলে না।
গাজিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের কুতুবুদ্দিন মোল্লা জানান, সেতু সংস্কারের মতো অর্থ পঞ্চায়েতে নেই। তবে সমস্যার কথা সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে জানানো হয়েছে। কুলপির তৃণমূল বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার বলেন, “ওই সেতুটি তৈরির জন্য পরিকল্পনা করে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে।” |