বালকের প্রাণের বিনিময়ে আপাতত মোটরভ্যান চলা নিষিদ্ধ হল কালনা শহরে। শুক্রবার পুরসভার তরফে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গত বছর পাঁচেক ধরেই মোটরে চলা ভ্যানের রমরমা বেড়েছে কালনা শহর ও তার আশপাশে। চালকলে ধান নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে শহরে যাওয়ার জন্য আশপাশের গ্রামের মানুষদের ভরসা এই ভ্যানগুলি। ভাগীরথীতে স্নানের জন্যও গ্রামের মানুষ এগুলিতে চড়েন। কিন্তু এই সব বেআইনি ভ্যানের দাপটে শহরে যানজটের সমস্যা সঙ্গে বেড়েছে দুর্ঘটনার হারও।
কিন্তু এত দিন কারও তেমন টনক নড়েনি। বছর তিনেক আগে এই সব ভ্যান নিয়ন্ত্রণের জন্য মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে সর্বদলীয় বৈঠক হয়েছিল। ঠিক হয়, গ্রামের মানুষের জীবিকার স্বার্থে বাইরে চলতে দেওয়া হলেও কালনা শহরে কোনও ভাবেই সেগুলি ঢুকবে না। গ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে এলে তাদের শহরের মুখেই নামাতে হবে। |
বেআইনি ভ্যান রুখতে পুলিশি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় বৈঠকে। কিন্তু কিছু দিন পরেই নজরদারি শিথিল হয়ে যাওয়ায় শহরে ভ্যানের সংখ্যা বেড়েই চলে।
বৃহস্পতিবার মহাপ্রভুপাড়ায় ধান বোঝাই একটি মোটরভ্যান সাইকেল ভ্যানকে পাশ কাটাতে গিয়ে সিমেন্টে গড়া বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মারে। খুঁটি উপড়ে পড়ে কাছাকাছি থাকা বছর আটেকের অতনু মণ্ডলের উপরে। কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। এর পরে ক্ষুব্ধ জনতা ভ্যানচালকের বাড়িতে ভাঙচুর করে। তার দাদার মোটরভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেয়। রাস্তা অবরোধ করে ভ্যানচালককে ধরা ও মোটরভ্যানের রমরমা বন্ধের দাবি জানায় তারা। পুলিশ ও পুরসভার লোকজন এসে দাবিপূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
এ দিন কালনার উপ-পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, “ওই ঘটনার পরে পুরসভা আর বেআইনি ভাবে মোটরভ্যান চলতে দেবে না। নিয়ম ভাঙলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তাঁর মতে, লাইসেন্স ছাড়া এই চলাচলের ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছিল। কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “মহকুমা স্তরে ফের একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” |