|
|
|
|
দুর্ঘটনায় জনরোষ, পুলিশের গুলি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কালিয়াচক |
ট্রাকের ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যুর পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তাল হয়ে ওঠে মালদহের কালিয়াচকের মোথাবাড়ি। ট্রাকের চালককে গ্রেফতারের দাবিতে উত্তেজিত জনতা মোথাবাড়ির পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। শুরু হয় পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ। লাঠি চালিয়ে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ অন্তত তিন-চার রাউন্ড গুলি চালায়। লাঠি-ঢিলের আঘাতে ৪ জন পুলিশকর্মী ও ১০ জন স্থানীয় বাসিন্দা জখম হয়েছেন। তাঁদের কালিয়াচক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে অবশ্য ছেড়ে
দেওয়া হয়।
অভিযোগ, পুলিশ বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়েছে। পক্ষান্তরে পুলিশের দাবি, গোলমালের সময়ে দুষ্কৃতীরাই শূন্যে গুলি চালিয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “হামলাকারীদের ঠেকাতে লাঠি চালাতে হয়েছে। তবে পুলিশ গুলি চালায়নি। গোলমালের সময়ে দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছে বলে কিছু গ্রামবাসী বলেছেন। সবই খতিয়ে দেখা হবে।” |
|
ক্ষিপ্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি পুলিশের। বৃহস্পতিবার মোথাবাড়িতে মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। |
পুলিশের লাঠি চালানোর নিন্দা করেছেন মোথাবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক তথা রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, “ট্রাকের ধাক্কায় যুবক মারা যাওয়ার পরেই যদি পুলিশ চালককে গ্রেফতার করত, তবে এই ঘটনা ঘটত না। চালককে গ্রেফতার করার দাবি জানাতে স্থানীয় বাসিন্দারা ফাঁড়িতে গিয়েছিলেন। তখন পুলিশই বিনা প্ররোচনায় গ্রামবাসীদের উপর লাঠি চালিয়েছে। শূন্যে গুলিও ছুড়েছে তারা।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র অভিযোগ করেন, পুলিশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে যে অসন্তোষ রয়েছে, তারই বহিঃপ্রকাশ এ দিনের ঘটনা।
বিকেল ৩টে নাগাদ দুলালগঞ্জের জলিল শেখ (২৪) নামে এক যুবক সাইকেলে মোথাবাড়ি-কালিয়াচক রাজ্য সড়ক ধরে কালিয়াচকের দিকে যাচ্ছিলেন। পিছন থেকে ট্রাকটি তাঁকে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলেই জলিলের মৃত্যু হয়। চালক ট্রাকটি নিয়ে কালিয়াচকের দিকে পালিয়ে যান।
এর পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ট্রাকের চালককে গ্রেফতারের দাবিতে মোথাবাড়ি ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে। দীর্ঘক্ষণ পরেও পুলিশ ট্রাকের চালককে গ্রেফতার করতে উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। উত্তেজিত জনতা ফাঁড়ির প্রধান ফটক ভেঙে, পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল ছুড়তে থাকে। মারমুখী গ্রামবাসীদের হামলার ভয়ে পুলিশকর্মী, অফিসারেরা ফাঁড়ির ভিতরে ঢুকে দরজা জানলা বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে কালিয়াচক থানার আইসি বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ওই মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে যান। সেই সময়েই পুলিশ শূন্যে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। |
|
|
|
|
|