|
|
|
|
গোষ্ঠী গড়ে চা-কারখানা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
চাষিদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উদ্যোগে চা তৈরি কারখানার শিলান্যাস হল ময়নাগুড়িতে। বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়ির পানবাড়ি এলাকায় তার শিলান্যাস করেন চা পর্ষদের ডেপুটি ডিরেক্টর কল্যাণকুমার ভট্টাচার্য। ‘পানবাড়ি স্মল টি গ্রোয়ার্স সোসাইটির উদ্যোগে ওই কারখানা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে কয়েকশো চা চাষি উপস্থিত ছিলেন। কল্যাণবাবু বলেন, “ভারতের অন্য কোথাও চা চাষিদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নিজস্ব কারখানা নেই। ময়নাগুড়ির পানবাড়ির ওই চা কারখানা শুধু দৃষ্টান্ত নয়। একে মডেল হিসাবে গড়ে তোলা হবে।” কারখানা তৈরি করতে খরচ হবে প্রায় তিন কোটি টাকা। আগামী মে মাসে কারখানার উৎপাদন শুরুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। পানবাড়ি স্মল টি গ্রোয়ার্স সোসাইটির সম্পাদক বাদল দেবনাথ বলেন, “কারখানার উদ্বোধন করতে আমন্ত্রণ জানানো হবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশকে।” চা পর্ষদ সূত্রে জাননা গিয়েছে, ফড়েদের হাত থেকে বাঁচতে ২০০৪ সালে সাতটি গ্রামের মাত্র ৭৩ জন চা চাষিকে নিয়ে কাজ শুরু করে পানবাড়ি স্মল টি গ্রোয়ার্স সোসাইটি। মাত্র সাত বছরে ২৬৬ জন চা চাষি ওই সংস্থায় যোগ দেন। বর্তমানে সদস্য সংখা ৩৪০ জন। সংস্থা তৈরির শুরু থেকে চা চাষিরা নিজস্ব কারখানা তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। |
|
ছবিটি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক। |
এ জন্য প্রত্যেক সদস্য কেজি প্রতি কাঁচা চা পাতা বিক্রির লভ্যাংশ থেকে ১ টাকা করে সংস্থায় সঞ্চয় শুরু করেন। গত তিন বছরে সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৬ লক্ষ টাকা। নিজস্ব তহবিল সংগ্রহের পরে সংস্থার তরফে চা পর্ষদের কাছে চা কারখানা তৈরির অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। পর্ষদের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে সাড়ে ৪ বিঘা জমি কিনে প্রস্তুতি শুরু করে দেন চাষিরা।” পানবাড়ি স্মল টি গ্রোয়ার্স সোসাইটির সদস্য চা চাষিরা বছরের ২০ লক্ষ কেজি কাঁচা চা পাতা উৎপাদন করেন। সংস্থার কর্তারা জানান, কারখানা তৈরি হলে তাঁরা নিজস্ব বাগানের পাতায় বছরে প্রায় ৪ লক্ষ কেজি চা উৎপাদন করতে পারবেন। চা কারখানার ভিত্তি প্রস্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত চাষিরা স্বপ্ন পূরণ হতে দেখে এ দিন আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান। স্থানীয় চা চাষি দিলীপ মণ্ডল বলনে,“ বাগান তৈরির পরে ফড়েদের নির্ধারিত দামে পাতা বিক্রি করে ঠকতে হয়েছে। সংস্থা তৈরির পরে চাষিদের পাতার দাম নিয়ে সমস্যা হয়নি। কারখানা তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলে পাতা বিক্রির জন্য বাইরের বাজারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না।” চা চাষি সন্তোষ শর্মা, রাজু, বিশ্বাসরা জানান, শুরুতে অনেকেই ভাবতে পারেনি। চাষিদের নিজস্ব কারখানা হবে। অনেক বাধা এসেছে। কিন্তু সব জল্পনার শেষ হল। কারখানার স্তম্ভ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে অন্য কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানান সংস্থার সম্পাদক বাদলবাবু। |
|
|
|
|
|