বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে ফোনটা আসার পর থেকেই যেন বোবা হয়ে গিয়েছেন বেলা মণ্ডল। ছোট ছেলে সহদেব আর বাড়িতে ফিরবে না- এ কথা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। বিশ্বাস করতে পারছে না পাড়া পড়শিরাও।
বুধবার রাতে মহাকরণে নিজের সার্ভিস রিভলবার থেকে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল সহদেব মণ্ডল। রাতে কলকাতা পুলিশ সহদেবের ছাতনার বারবাখড়ার বাড়িতে ফোন করে এই খবর দেন। প্রথমে ফোন ধরেছিলেন সহদেবের বিধবা মা বেলাদেবী। তাঁর হাত থেকে ফোন নিয়ে কথা বলেন সহদেবের জেঠতুতো দাদা চিত্ত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার সকালে সে কথাই শোনাচ্ছিলেন চিত্তবাবু। তাঁর কথায়, “ফোনটা আসার পর থেকেই কাকিমা চুপ হয়ে গিয়েছেন। আমি তাঁর হাত থেকে ফোনটা ধরেছিলাম। মনে হল পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে গেল।”
তিনি জানান, ৮ মার্চ শালতোড়ায় সহদেবের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। এক সপ্তাহ আগে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। ভাবী বধূকে নিয়ে বিয়ের জিনিসপত্র কেনাকাটি করেন। বাড়িতে বিয়ে বাড়ির তোড়জোড় চলছিল। তার মধ্যে এই রকম ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারছেন না পরিবারের কেউ। পড়শি প্রদীপ সেন, বিপ্লব সিংহরাও বিশ্বাস করতে পারছেন না সহদেব আর নেই। তাঁরা বলেন, “সহদেব ভালো ছেলে ছিল। সে আত্মহত্যা করতে পারে ভাবতে পারছি না।” শোকে বিহ্বল গ্রামবাসীরাও। আকস্মিক এই মৃত্যু হাজারো প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছে সহদেবের পরিবার ও গ্রামবাসীদের। চিত্তবাবু বলেন, “আত্মহত্যার জন্য কিছু কারণ থাকবে। সে রকম কোনও সমস্যা সহদেবের ছিল বলে শুনিনি।”
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় চণ্ডীদাস বিদ্যাপীঠ স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে পড়তেই তিনি সিআরপিএফ-এ চাকরি পান। কয়েক বছর পর কলকাতা পুলিশে যোগদান করেন। তাঁরা দুই ভাই এক বোন। তিনি ছিলেন ছোট। দাদাও পুলিশ। ছোটবেলায় বাবাকে হারানো সহদেব তাই ছুটি পেলে গ্রামের বাড়িতে মায়ের কাছে আসতেন। আর তার ফেরা হল না। |