সর্বশিক্ষা প্রকল্পের স্কুল ঘর নির্মাণের প্রায় দু’লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ‘সাসপেন্ড’ করা এক প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। নির্মলকান্তি পাত্র নামের ওই ব্যক্তি হুড়া ব্লকের কলাবনী হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ২০১০ সালের অক্টোবর মাসের পর থেকে তিনি ‘পলাতক’ ছিলেন। কোনও কারণ না দেখিয়ে দীর্ঘদিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকা এবং বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা টাকার হিসেব না দেওয়ার কারণে এক বছর আগেই স্কুল পরিচালন সমিতি ওই প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করেছিল। বুধবার সন্ধ্যায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুরুলিয়া শহর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে ধরে। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া আদালতে তাঁকে তোলা হলে বিচারক তাকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতের রাখার নির্দেশ দেন। |
পুরুলিয়া জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ছিল নির্মলবাবুর বিরুদ্ধে। ২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর হুড়া-২ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিদ্যাবতী পতি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেন। বিদ্যাবতীবাবু জানান, ২০০৯-১০ আর্থিক বর্ষে সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পে কলাবনী স্কুলে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য ওই টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। নির্মলকান্তিবাবু এক সহশিক্ষককে দিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে ওই অর্থ তুলেছিলেন। পরে সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে ওই অর্থ তুলেও তিনি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করেননি। বিদ্যাপতিবাবু বলেন, “সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিকের নির্দেশ অনুযায়ী ব্লক স্তরের এক সহকারী বাস্তুকারকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করে দেখা যায় স্কুলে ওই অর্থে কক্ষ তৈরি হয়নি। তিনি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জাল নথি জমা দিয়েছিলেন।” পুলিশ জানায়, ওই শিক্ষক পলাতক থাকায় তাঁকে এত দিন ধরা যায়নি।
স্কুল সূত্রে অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুর কাঁথি থানার জুনবনি গ্রামের বাসিন্দা নির্মলকান্তি পাত্র ২০১০ সালের গোড়া থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাত মাসে স্কুলের মিড ডে মিল, ছাত্রাবাস, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ-সহ বিভিন্ন তহবিল থেকে ধাপে ধাপে ১২ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা তুলেছিলেন। কলাবনী হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক বাসুদেব দাস জানান, ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে ওই শিক্ষক ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ছুটি নেন। তারপর আর কাজে যোগ দেননি। তাঁর অভিযোগ, “তাঁর কাজ সন্তোষজনক ছিল না। তা ছাড়া বার বার খরচের হিসাব চাওয়া সত্ত্বেও উনি তা আমাদের দেননি। কারণ না দেখিয়ে দীর্ঘ সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকা এবং খরচের হিসাব না দেওয়ার জন্য পরিচালন সমিতি তাকে সাসপেন্ড করে।” তবে এ দিন থানায় অভিযোগ সম্পর্কে নির্মলবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশের আশা, নির্মলবাবুকে জেরা করে আরও তথ্য মিলবে। |