মানবিক পুলিশ, মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে ফিরল মায়ের কোলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গাইঘাটা |
মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে মায়ের কোলে ফিরল পুলিশের সহায়তায়। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার মণ্ডলপাড়ার ৪৮ নম্বর রেলগেট এলাকার। বুধবার গভীর রাতে এলাকায় উদভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করছিলেন বছর বাইশের এক যুবক। জামা-প্যান্ট ও জ্যাকেট পরা যুবকটিকে শীতে কাঁপতে দেখে স্থানীয় লোকজন তাঁর কাছে নাম-ঠিকানা জানতে চান। কিন্তু যুবকটি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে থাকে। এতে সন্দেহ হয় বাসিন্দাদের। ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে যুবকটি ঘোরাঘুরি করছে এই ধারণা থেকে সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা গাইঘাটা থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে যুবকটিকে থানায় নিয়ে আসে। দেখা যায় সে মানসিক ভারসাম্যহীন। |
|
মা, ঠাকুমার সঙ্গে স্বপন।--নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপনের বাড়ি বিরাটতে। মা চিত্রলেখা দেবীর সঙ্গে সে যাদবপুরে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। সেখান থেকে মঙ্গলবার তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। শিয়ালদহ স্টেশনে ট্রেনে উঠতে গিয়ে চিত্রলেখাদেবী পড়ে যান। ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে দেখে তাতে উঠে পড়ে স্বপন। বিরাটি স্টেশনের বদলে সে ঠাকুরনগর স্টেশনে নামে। তারপর ঘুরতে ঘুরতে গাইঘাটার মণ্ডলপাড়ায় চলে আসে। রাত ১২টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খবর পেয়ে এস আই অয়ন চক্রবর্তী গিয়ে স্বপনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। ওসি অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, “কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছিল যুবকটি ডাকাত নয়, মানসিক ভারসাম্যহীন। কোনওরকমে ওর কাছে জানা যায় বাড়ি বিরাটিতে। বাবার নাম সন্তোষ পাল। থানায় ওর জন্য খাবার, কম্বলের ব্যবস্থা করা হয়।”
ছেলেকে না পেয়ে শিয়ালদহ জিআরপি-তে বুধবার নিখোঁজ ডায়েরি করেন চিত্রলেখাদেবী। তার আগে তিনি বিরাটি থানাতেও খোঁজ নেন। স্বপনের পরিচয় জানার পরে গাইঘাটা থানার পুলিশ বিরাটি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। বিরাটি থানা থেকে স্বপনের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ছেলেকে নিতে আসেন চিত্রলেখাদেবী। ছেলেকে ফিরে পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “ওকে ফিরে পেয়ে ভাল লাগছে। খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পুলিশকে কি বলে ধন্যবাদ দেব বুঝতে পারছি না। ওঁদের জন্যই ছেলেকে ফিরে পেলাম।” |
|