|
|
|
|
সমাবেশে বন্ধ বাস, দুর্ভোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
শাসকদলের সমাবেশ উপলক্ষে বেসরকারি বাস চলাচল পুরোপুরি প্রায় বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই দুর্ভোগে পড়লেন মানুষ। এ দিন মেদিনীপুর শহরে ছিল তৃণমূলের সমাবেশ। সমাবেশে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আনতে জেলার বিভিন্ন রুটের প্রায় সব বেসরকারি বাস ভাড়া নিয়ে নিয়েছিল শাসকদল। ফলে, সকালের পর থেকেই ভেঙে পড়ে পরিবহণ ব্যবস্থা। পথে বেরিয়ে নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে। অনেকে অফিস-স্কুলেও যেতে পারেনি। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে তাঁদের কিছু করার ছিল না। অনেক দিন আগে থেকেই সমাবেশের প্রচার করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, বাস পরিবহণ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েনি। দুপুরের দিকেই শুধু পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। |
|
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-বিমান বসুরা বুধবারই সভা করে গিয়েছেন মেদিনীপুর কলেজ মাঠে।
বৃহস্পতিবার সেই মাঠেই তৃণমূলের সমাবেশ। প্রধান বক্তা ছিলেন মুকুল রায়। সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
জেলার বহু এলাকায় যাতায়াতের জন্য ভরসা একমাত্র বাসই। ফলে, বাস না চলায় দুর্ভোগও বেশিই হয়েছে। এ দিন সকাল থেকেই জেলার বাসস্ট্যান্ডগুলি খালি হতে শুরু করে। একে একে প্রায় সব বাস বেরিয়ে যায় সমাবেশের কর্মীদের নিয়ে। আগে থেকেই ভাড়া হয়ে গিয়েছিল সে-সব বাস। মেদিনীপুর, খড়্গপুর, চন্দ্রকোনা, ঘাটাল--সর্বত্রই ছবিটা ছিল প্রায় একই। বাস ধরার জন্য যাত্রীরা এসে দীর্ঘক্ষণ স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থেকেছেন। কিন্তু, বাসের দেখা মেলেনি। দুপুরের দিকে মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলেন অশোক পাত্র। তাঁর যাওয়ার কথা ছিল বেলদায়। তিনি বলেন, “তৃণমূলের সমাবেশের কথা জানতাম। কিন্তু, কোনও বাসই থাকবে না, বুঝতে পারিনি।” শুধু বাসই নয়, অনেক জায়গায় ট্রেকারও ভাড়া করে নিয়েছিল শাসকদল। ফলে, নিয়মিত রুটে ট্রেকারও ছিল না। সেখানেও যাত্রীরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। আগের দিন, বুধবারই মেদিনীপুর শহরে সিপিএমের সমাবেশ হয়েছে। ওই সমাবেশের জন্যও কিছু বেসরকারি বাস ভাড়া করা হয়েছিল। তবে তার প্রভাব পরিবহণ ব্যবস্থার উপরে ততটা পড়েনি। ওই দিন বাসস্ট্যান্ডগুলি একেবারে খালি ছিল না। যে সব রুটে আধ ঘণ্টা-এক ঘণ্টা অন্তর বাস চলাচল করে, সেখানে হয়তো আরও বেশি সময় লেগেছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার আর বাসের দেখাই মিলল না! |
|
|
ফাঁকা মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ড। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে যাত্রীরা |
|
তৃণমূল সূত্রের খবর, সমাবেশের জন্য প্রায় ১২০০ বাস ভাড়া করা হয়েছিল। ওই সংখ্যক বাসই চলে জেলায়। অর্থাৎ সব বাসই আগে থেকে ‘বুক্ড’। ফলে পরিবহণ ব্যবস্থাটাই পুরো ভেঙে পড়ে। সাধারণ মানুষের যে ভোগান্তি হয়েছে, তা স্বীকার করছেন জেলা বাস-ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি। তাঁর কথায়, “সমাবেশের জন্য প্রায় সব বেসরকারি বাসই ভাড়া করা হয়েছিল। ফলে, সকালের পর থেকেই রুটে সে ভাবে আর বাস চলেনি। এ জন্য নিত্যযাত্রীরা তো দুর্ভোগে পড়বেনই।” জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ দিন তীব্র যানজটেরও সৃষ্টি হয়। সমস্যায় পড়েন পথচলতি মানুষ। দুপুরে মেদিনীপুর শহরে ঢোকার মুখেও যানজট হয়। তবে, পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৎপর ছিল পুলিশ। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে বাস ভাড়া করা হয়নি। সমাবেশে আসার জন্য অঞ্চলস্তরের কর্মীরাই বাস ভাড়া করেছেন। সমাবেশের কথা অনেক দিন আগে থেকেই প্রচার করা হয়েছে। এ দিন একাংশ যাত্রী সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”
|
|
|
|
|
|