বড় ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে টোলগে-পেনদের শিবিরে হঠাৎ-ই হাজির এক মনোবিদ!
আগের দু’টি ডার্বি ম্যাচের হারের কালো দাগ মন থেকে মুছে ফেলতে ট্রেভর মর্গ্যান যাকে নিয়ে এসেছেন তাঁর নাম- সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়! এক বহুজাতিক সংস্থার কর্মী। স্ট্র্যাটেজি, ট্যাকটিক্সের অঙ্ক পাশে সরিয়ে আপাতত বড় ম্যাচের দু’দিন আগে তাঁরই দ্বারস্থ ইস্টবেঙ্গল!
দেড় ঘণ্টা অনুশীলনের পরে লাল-হলুদ ফুটবলারদের মানসিক শক্তি বাড়াতে প্রায় আড়াই ঘণ্টার লম্বা ক্লাসে প্রচুর ভিডিও দেখালেন সৌমিত্র। উল্লেখযোগ্য? দু’টো পাহাড়ের মাঝখানে বন্দি এক পর্বতারোহীর জীবনযুদ্ধের গল্প। পাথরের নীচে একটা হাত থেতলে গিয়েছে। বাঁচতে গেলে একটা হাত কাটতেই হবে। সেই অবস্থা থেকে একটা হাত বিসর্জন দিয়ে কী ভাবে আবার জীবনের মূল স্রোতে ফিরে এলেন তিনি, সেটাই দেখানো হল মেহতাব-সৌমিকদের।
শনিবার আইলিগে বেঁচে থাকার জন্য অবশ্য কোনও ‘অঙ্গ’ বিসর্জন করার দরকার পড়বে না ইস্টবেঙ্গলের। |
মোহনবাগান ‘হার্ডল’ টপকাতে প্রয়োজন শুধু আত্মবিশ্বাস। আর সেটা আমদানি করতেই মনোবিদের শরণাপন্ন তিনি, অকপটেই জানিয়ে দিয়েছেন মর্গ্যান। লাল-হলুদের কোচ ব্রিটিশ। তাই ভাঙলেও মচকাবার পাত্র নন। মরসুমে প্রথম বার দলকে চাঙ্গা করতে মনোবিদ আনলেও, প্রকাশ্যে অবশ্য কোনও চাপ আছে মানতে চান না মর্গ্যান। আগের দু’টি ডার্বি ম্যাচের আগে যা বলেছিলেন এ বারও সেই রেকর্ড বাজছে, “আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই মোহনবাগান ম্যাচকে দেখছি। তিন পয়েন্টের জন্য নামব। বিপক্ষ নিয়ে ভাবছি না।”
বাগান লুঠ করতে মনোবিদের সঙ্গে পুরনো জুটিকেও আবার আমদানি করতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। রবিন-টোলগে জুটি। বৃহস্পতিবার সকালে ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে গিয়ে দেখা গেল, রক্ষণের কম্বিনেশন ঠিকঠাক করতেই বেশি ব্যস্ত লাল-হলুদ কোচ। আলাদা করে সময় দিলেন চার ডিফেন্ডারের জন্য। ওপারা, গুরবিন্দর, হরমনজিৎ এবং রবার্ট। দেখে মনে হল, প্রয়াগ ম্যাচের হারের কোপ পড়তে চলেছে সৌমিক দে-র ওপরেই। অনুশীলনের পরে যখন পেন-টোলগেরা বুট, বল নিয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়েছেন, তখনও ওপারাদের নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে মর্গ্যান। গোল করার চেয়ে গোল হজম করা নিয়ে যে ইদানীং মর্গ্যান ভাবছেন তা অনুশীলনে স্পষ্ট।
রক্ষণ চিন্তায় রাখলেও মাঝমাঠে কোনও পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন না। পেন, মেহতাবের দু’পাশে ভাসুম এবং সুশান্ত। প্রয়োজনে পরিবর্ত হিসেবে ভাসুমের জায়গায় সঞ্জু। সৌমিকের উপর কোপ পড়লেও আগের ম্যাচের ‘খলনায়ক’ গুরপ্রীত কিন্তু পোস্টের নীচে থাকছেন। মর্গ্যান বিপক্ষকে গুরুত্ব দিতে না চাইলেও, ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক কিন্তু সতর্ক। সঞ্জু বলছিলেন, “বদলা নেওয়ার মানসিকতা নিয়ে নামলে, খেলতেই পারব না।” এ দিকে মোহনবাগান তাদের মাঠে টিকিট কাউন্টার করার জন্য চিঠি দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, “ইস্টবেঙ্গল আমাদের অনুরোধ রাখেনি। সে জন্য আমরা কোনও টিকিটও তুলিনি।” |