|
|
|
|
দুই শরিকের চাপানউতোর |
ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনানে প্রধান পদে কংগ্রেসকে হারাল তৃণমূল,
মাজু পঞ্চায়েতে প্রধান পদে পরাজিত তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মাত্র দু’জন কংগ্রেসের সদস্য। তাতেও পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান পদ দু’টি পেয়ে গেল তারা। ঘটনাটি হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের মাজু পঞ্চায়েতের।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এই পঞ্চায়েতে সদস্য সংখ্যা ১৬ জন। তৃণমূল পেয়েছিল ৭টি আসন। সিপিএম পেয়েছিল ৬টি। কংগ্রেস পায় ২টি এবং বিজিপি একটি আসনে জয়ী হয়। কংগ্রেস-তৃণমূল বোর্ড গঠন করে। প্রধান হন তৃণমূলের অমর বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস পায় উপপ্রধান পদটি। বছর খানেক চলার পরেই অবশ্য তৃণমূলের কিছু সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। ভোটাভুটিতে অপসারিত হন অমরবাবু। প্রধান নির্বাচিত হন তৃণমূলেরই জয়ন্ত দাস। দিন কয়েক আগে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে সিপিএম। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো ছিলই। যার জেরে পরাজিত হন জয়ন্তবাবু। ফের প্রধান পদের দাবিদার হয়ে ওঠেন প্রাক্তন প্রধান অমরবাবু। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের নীলোৎপল কর প্রধান পদের লড়াইয়ে দাঁড়িয়ে যান। বৃহস্পতিবার ভোটাভুটিতে দেখা যায়, ১ ভোটে অমরবাবুকে হারিয়ে দিয়েছেন নীলোৎপলবাবু। অমরবাবু পেয়েছেন ৭টি ভোট। নীলোৎপল ৮টি।
ঘরোয়া কোন্দলেই যে এই পরিস্থিতি, সে কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে জগৎবল্লভপুরের যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আরও সংগঠিত ভাবে আমরা মাজুর মানুষের আস্থা অর্জনের চেষ্টা চালাব।” অন্য দিকে, নীলোৎপলবাবুর কথায়, “মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো প্রধান বদল করছিল তৃণমূল। দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণ বেড়েই চলেছিল। আমরা কয়েক জন পঞ্চায়েত সদস্য দুর্নীতিমুক্ত এবং স্থায়ী প্রশাসন চেয়েছিলাম।” তা করতে গিয়ে সিপিএম এবং বিজেপি সদস্যদের সমর্থন নেওয়ার মধ্যেও ‘অন্যায়’ কিছু দেখছেন না সদ্য নির্বাচিত প্রধান। মাজুর এলাকার কংগ্রেস সভাপতি অলিপ খান অবশ্য বলেন, “সিপিএমের সমর্থন নিয়ে আমরা বোর্ড গঠন করতে চাইনি। আমরা নীলোৎপলবাবুকে প্রধান পদে দাঁড়াতে বারণই করেছিলাম।” দলের নির্দেশ অমান্য করা নিয়ে নীলোৎপলবাবুর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “আমাকে প্রধান পদে দাঁড়াতে বলেছিলেন কিছু পঞ্চায়েত সদস্য। মানুষের স্বার্থেই মত দিয়েছি।” একই সঙ্গে তিনি এ-ও জানান, ভোটাভুটির আগে তিনি বিডিও অফিসে গিয়ে জানিয়ে এসেছেন, কংগ্রেসের হয়ে নয়, প্রধান পদে তিনি লড়বেন পঞ্চায়েতের ‘নির্দল’ সদস্য হিসাবে। অন্য দিকে, ভোটাভুটিতে কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে প্রধান পদে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ঘটনাটি আমতা ২ ব্লকের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েতের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পঞ্চায়েতে সদস্য সংখ্যা ১৩ জন। কংগ্রেস-তৃণমূল জোট করে বোর্ড গঠন করে। কংগ্রেস পেয়েছিল ৭টি আসন। তৃণমূলের ঝুলিতে আসে ২টি। সিপিএম জয়ী হয় ৪টি আসনে। প্রধান পদটি পায় কংগ্রেস। উপপ্রধান হন তৃণমূল সদস্য। কিছু দিনের মধ্যেই অবশ্য দুই জোট শরিকের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। বছর খানেক আগে কংগ্রেসের ৩ জন এবং সিপিএমের ২ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। গত ২ জানুয়ারি প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূল সদস্যেরা। ১৯ জানুয়ারি ওই প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটিতে হেরে যান তৎকালীন প্রধান কংগ্রেসের করুণা বেরা। বৃহস্পতিবার প্রধান পদে ভোটাভুটিতে কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন করুণাই। তাঁকে হারিয়ে প্রধান পদে জয়ী হন তৃণমূলের কাকলি মণ্ডল। তিনি পেয়েছেন ৭টি ভোট। করুণাদেবী পেয়েছেন ৬টি ভোট। |
|
|
|
|
|