অচেনা ই-মেল আইডি-র ফাঁদ থেকে সাবধান! অজ্ঞাতপরিচয় প্রেরকের কাছ থেকে আসা আপাত-নিরীহ এমন ই-মেল খুলেই একটি আন্তর্জাতিক জালিয়াত-চক্রের খপ্পরে পড়েছেন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। গোটা দেশে সক্রিয় এই চক্রটির হদিস পেয়েছে কলকাতা পুলিশ। তবে চক্রের মাথা বিদেশি। জালিয়াতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার পুদুচেরি থেকে এক নাইজিরিয় যুবককে গ্রেফতার করেছেন কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক-জালিয়াতি শাখার গোয়েন্দারা।
অচেনা আইডি-তে পাঠানো এই ফাঁদের নাম ‘ট্রোজান ভাইরাস’। অজানা প্রেরকের কাছ থেকে আসা সাধারণ শুভেচ্ছা-বার্তা বা কোনও আকর্ষক প্রস্তাবের ই-মেলে না-বুঝে সাড়া দিলেই আপনার কম্পিউটার আক্রান্ত হতে পারে এই ভাইরাসে। এর পরে নিজের মেল আইডি-তে ঢুকলেই ট্রোজানের মাধ্যমে অদৃশ্য জালিয়াত অনায়াসে আপনার পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতে পারে। লালবাজারের কর্তাদের দাবি, ঠিক এই ভাবেই নাইজিরিয় জালিয়াতদের চক্রটি এ দেশের বেশ কয়েকজন ই-মেল আইডিধারীকে ফাঁদে ফেলেছিল। এর পরে অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ের সময়ে তাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবতীয় টাকা হাতিয়ে নেওয়া শুরু হয়।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) দময়ন্তী সেন জানান, এই চক্রটির অন্যতম চাঁই ফেলিক্স দুবুইসি এজেডি পুদুচেরিতে ধরা পড়েছে। এক পুলিশকর্তা বলেন, “অন্তত ১৪-১৫ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে এই জালিয়াতেরা কয়েক লক্ষ টাকা সরিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।”
পুলিশ জানায়, টাকা সরানোর সময়েও পুলিশের চোখে ধূলো দিতে চেষ্টার কসুর করত না এই জালিয়াতরা। ‘কমিশনে’র টোপ দিয়ে দেশের বিভিন্ন শহরে বেকার যুবকদের দিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলানো হত। তাদের অ্যাকাউন্টে জালিয়াতির টাকা সরানোর পরে নির্দেশ দেওয়া হতো, কোথায় সেই টাকা পাঠাতে হবে। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিভিন্ন শহরের বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টে হাতবদলের পরে চক্রের চাঁইদের হাতে পৌঁছত জালিয়াতির টাকা। গত ১১ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের ব্যবসায়ী, অলিন্দ জৈনের কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। মাসখানেক ধরে তদন্ত চালিয়ে চক্রের মাথাটিকে চিহ্নিত করে ব্যাঙ্ক জালিয়াতিদমন শাখার তদন্তকারী দল। |