সর্বভারতীয় স্তরে সংখ্যালঘু সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে তিনি যাতে সরব হন, তার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে ‘বার্তা’ পাঠাল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন। এশিয়া মহাদেশের প্রাচীনতম এই ইউনিয়নের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার আলিগড়ে এক কনভেনশনে আমন্ত্রিত বক্তা ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সম্পাদক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। যাঁর সঙ্গে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতার বৈঠক হয়েছে এবং সিদ্দিকুল্লার সংগঠন প্রকাশ্যেই রাজ্য সরকারের ‘পাশে থাকা’র ডাক দিয়েছে। সিদ্দিকুল্লার কাছেই এ রাজ্যে ‘পরিবর্তনে’র কাহিনি জানতে চেয়েছিল আলিগড়ের ছাত্র ইউনিয়ন। সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ শাহরুখ আহমেদ সেখানে ছিলেন। সিদ্দিকুল্লার দাবি, জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সর্বভারতীয় হারে সংখ্যালঘু সংরক্ষণের যে দাবি উঠতে শুরু করেছে, তা নিয়ে তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সরব হন, এমনই চাইছে আলিগড়ের ছাত্র সংগঠন। সিদ্দিকুল্লার কথায়, “আগামী দিনে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হতে চেয়েছেন।”
বাবরি মসজিদ কমিটির নেতা জাফরিয়র গিলানি-সহ সারা দেশ থেকে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ওই কনভেনশনে। সিদ্দিকুল্লার বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে সচরাচর কেউ এখানে ডাক পান না। আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে সম্মানিত বোধ করছি। ওঁরা পশ্চিমবঙ্গে ‘পরিবর্তন’ নিয়ে জানতে উৎসাহী ছিলেন। নন্দীগ্রামের আন্দোলনের ফসল যে আমাদের রাজ্যে ফলেছে, সে কথা ওঁদের বলেছি।” প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের সময় ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’তে তৃণমূলের সঙ্গেই ছিল সিদ্দিকুল্লার জমিয়তে। নন্দীগ্রামের আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংখ্যালঘু মানুষও ছিলেন যথেষ্ট। তার পর থেকেই নন্দীগ্রামের ‘সাফল্যে’র দাবিদার সিদ্দিকুল্লারা। সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের একাংশ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি পূরণে ‘ব্যর্থতা’র অভিযোগ এনে সরব হওয়ার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা সিদ্দিকুল্লাকে ডেকে বৈঠক করেছেন। সিদ্দিকুল্লার সংগঠনও রাজ্য সরকারের ‘পাশে থাকা’র আশ্বাস দিয়েছে। মমতার ওই উদ্যোগ যে তাঁর সরকারের পক্ষে কাজ দিচ্ছে, ভিন্ রাজ্যে গিয়ে সিদ্দিকুল্লার বক্তব্যই তার ইঙ্গিত।
কেন্দ্রীয় সরকার প্রাথমিক ভাবে সংখ্যালঘুদের জন্য ৪% সংরক্ষণের কতা বলেছে। ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে কনভেনশনে দাবি তোলা হয়েছে, জনসংখ্যার অনুপাতের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়া উচিত। এই সূত্রেই মমতার হস্তক্ষেপের দাবি উঠেছে। সাচার কমিটির রিপোর্টের পরে সংসদকে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার কেন তাদের নির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা সংসদে জানাল না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। দাবি উঠেছে সংখ্যালঘু উন্নয়ন খাতে কেন্দ্রের ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করারও। |