টু-জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির জেরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ১২২টি টেলিযোগাযোগ সংস্থার ২০০৮ সালে পাওয়া লাইসেন্স বাতিল হওয়ায় বেশ কিছু ব্যাঙ্ক সমস্যায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ, স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক ওই সব সংস্থাকে ঋণ দিয়েছিল। এখন তাদের ঋণের টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যপারটিই অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকারও। এ দিন রায় বেরোনোর পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, “রায়ের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছি। এর পর কী অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে, দেখা হবে তাও।”
যে সব ব্যাঙ্ক ওই সব টেলিযোগাযোগ সংস্থাকে ঋণ দিয়েছিল, তার মধ্যে স্টেট ব্যাঙ্ক ছাড়াও রয়েছে আইডিবিআই ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক, ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স ইত্যাদি। তবে সব থেকে বেশি ঋণ দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। নগদ ঋণ এবং ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি মিলে মোট অঙ্কের পরিমাণ ৪৫০০ কোটি টাকা। তবে সংস্থার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সন্তোষ নায়ার জানান, “এর মধ্যে ১১০০ কোটি টাকা আমরা পাঁচটি সংস্থাকে ঋণ দিয়েছি। বাকি ৩৪০০ কোটি টাকা ছিল ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি। লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাওয়ার ফলে ওই গ্যারান্টির আর প্রয়োজন হবে না।”
নগদ ১১০০ কোটি টাকা নিয়েও বিশেষ সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে করছেন না নায়ার। তিনি বলেন, “যে সব সংস্থাকে ঋণ দিয়েছি, পুরনো ব্যবসার সুবাদে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভাল। আশা করি, ঋণের টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে সমস্যা হবে না।” তা ছাড়া ওই সব সংস্থার মধ্যে অনেকেই ফের লাইসেন্স পেতে পারে বলেও আশা স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের।
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক লাইসেন্স বাতিল হওয়া ওই সব টেলিযোগায়োগ সংস্থার মধ্যে কয়েকটিকে যা ঋণ দিয়েছিল, তার পরিমাণ ৫৮০ কোটি টাকা বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তবে তাঁরা ব্যবসা চালানোর জন্য ঋণ দিয়েছিলেন, লাইসেন্স পাওয়ার জন্য কোনও ঋণ দেননি। ভিডিওকন মোবাইলকে ১৪৬ কোটি টাকা দিয়েছিল কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক। ওই ব্যাঙ্কের সিএমডি অজয় কুমার বলেন, “যদিও টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে কোনও ঝুঁকি আছে বলে মনে করছি না, তবুও লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পর সংস্থাটি কী ভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।” |