|
|
|
|
কেন্দায় জমি নিয়ে দুর্নীতির নালিশ সিটু নেতার বিরুদ্ধে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জামুড়িয়া |
জমির চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল সিপিএমের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। জমি মালিকদের নামে ভুয়ো স্বাক্ষর করে ইসিএলের সঙ্গে জমি নিয়ে চুক্তি করে ফেলেছেন ওই প্রাক্তন প্রধান তথা সিটু নেতা, এমনই অভিযোগ জামুড়িয়ার কেন্দা গ্রাম এলাকার কয়েক জন বাসিন্দার। এ ব্যাপারে তাঁরা ইসিএলের সিএমডি এবং বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।
নিউ কেন্দা কোলিয়ারির কেন্দা গ্রামের বাসিন্দা অজিত মুখোপাধ্যায়, যাদব মণ্ডলদের অভিযোগ, গত সেপ্টেম্বরে তাঁরা জানতে পারেন, এলাকার প্রায় ৬০ জনের মোট ১২ একর ৬৪ শতক জমিতে কয়লা কেটে নিয়েছে ইসিএল। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ওই জমিতে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি না করেই কয়লা কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এক বাসিন্দা আন্নাবালা গোপের দাবি, ইসিএল নির্ধারিত দরের হিসেবে তাঁর ৩১ শতক জমির দাম হয় দেড় লক্ষ টাকা। বছর দু’য়েক আগে তৎকালীন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তথা সিটু নেতা দীনবন্ধু ভট্টাচার্য তাঁকে কুড়ি হাজার টাকা দিয়েছিলেন। তখন দীনবন্ধবাবুু তাঁকে জানিয়েছিলেন, ইসিএল জমি অধিগ্রহণ করার সময়ে বাকি জমি দেওয়া হবে। কিন্তু তার পরে আর কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। আর এক বাসিন্দা মন্থন মোদি আবার অভিযোগ করেন, দীনবন্ধুবাবুরা কিছু টাকা দিয়েছিলেন। তবে তার পরে আর কিছু জানাননি। মন্থনবাবুর অভিযোগ, পরে তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সিটু নেতৃত্বের মধ্যস্থতায় জমি নিয়ে ইসিএলের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। অশোক গোপ আবার দাবি করেন, তাঁদের দু’বিঘা জমি রয়েছে। দীনবন্ধুবাবুরা একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছিলেন।
তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল কমিটির সম্পাদক অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁদের ৪৪ শতক দেবোত্তর জমিতে কয়লা কেটেছে ইসিএল। তাঁরা জেনেছেন, ভুয়ো স্বাক্ষর করে ইসিএলের কাছে চুক্তি জমা দিয়েছিলেন দীনবন্ধুবাবু। এমনকী ১২ একর ৬৪ শতক জমি নেওয়া হলেও দীনবন্ধুবাবু জানিয়েছিলেন, ৬ একর জমি নেওয়া হচ্ছে। ইসিএলের নিয়ম অনুযায়ী ২ একরে এক জনের চাকরি দেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ক্ষেত্রে ৬ জনকে চাকরি দিতে হবে বলে তাঁদের দাবি। স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের প্রদেশ কমিটির সদস্য প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ইসিএলকে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ করেছেন, ওই সিটু নেতা জমির মালিকদের বিভ্রান্ত করে ইসিএল কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি করেছেন। এ বিষয়ে ইসিএলের পাশাপাশি জেলাশাসককেও চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা। অনুপবাবুর দাবি, ওই সিটু নেতার বিরুদ্ধে ভুয়ো স্বাক্ষর এবং চুক্তির অভিযোগে মামলা দায়ের করতে হবে।
অভিযুক্ত সিটু নেতা দীনবন্ধুবাবু দাবি করেন, তিনি জমি মালিকদের ব্যক্তিগত ভাবে কিছু টাকা দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ইসিএল জমির দাম দিলে তিনি পুরো টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। ভুয়ো স্বাক্ষর করে চুক্তির অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন তিনি। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “এমন অভিযোগের চিঠি আমি এখনও দেখিনি। এ ব্যাপারে যা বলার ইসিএল কর্তৃপক্ষ বলবেন।” কেন্দা কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। |
|
|
|
|
|