|
|
|
|
প্রয়োজনীয় বর্জ্য না মেলায় বন্ধ হল প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
প্রয়োজনীয় পরিমাণ বর্জ্য মিলছে না। এমন অভিযোগ তুলে বুধবার গভীর রাত থেকে দুর্গাপুরের কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে বর্জ্য ফেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন পুরকর্মীরা। মেয়র রথীন রায় বলেন, “আগাম কোনও কিছু না জানিয়ে হঠাৎ প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়েছে বেসরকারি সংস্থাটি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হচ্ছে।” সংস্থার তরফে অবশ্য দাবি করা হয়, সমস্যার কথা পুরসভাকে বারবার জানানো হয়েছিল। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশনের বরাদ্দ ও একটি বেসরকারি সংস্থার লগ্নিতে ২০১০ সালে দুর্গাপুরের শঙ্করপুরে এই কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে। সে বছরে ৩ অক্টোবর কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন রাজ্যের তৎকালীন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তার আগে পর্যন্ত দুর্গাপুর পুরসভার তরফে বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়ে ফেলা হত দুর্গাপুর সরকারি কলেজের কাছাকাছি একটি জায়গায়। দুর্গন্ধের জেরে ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াতে সমস্যায় পড়তেন বাসিন্দারা। তা ছাড়া বাতাসে প্লাস্টিকের টুকরো উড়ে পড়ত আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায়। সব মিলিয়ে, বাসিন্দাদের দুর্ভোগের অন্ত ছিল না। শঙ্করপুরে ওই কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি গড়ে ওঠার পরে এ সব থেকে রেহাই পান তাঁরা। পুরসভা বর্জ্য সংগ্রহ করে তা গাড়িতে করে পাঠিয়ে দিত এই কেন্দ্রে। এর পরে তা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রক্রিয়াকরণ করা হত। তৈরি হত প্লাস্টিক, সার, বিশেষ ধরনের ইট ইত্যাদি। কিন্তু বুধবার গভীর রাতে ওই কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের এক আধিকারিক অভিযোগ করেন, বর্তমানে কেন্দ্রে ১১৫ জন কর্মী রয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় বর্জ্য না আসায় সব কর্মীকে কাজ দেওয়ার মতো বর্জ্য পুরসভা পাঠাতে পারে না। ফলে সংস্থার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এই অবস্থায় কর্মী ছাঁটাই করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু সে কথা কর্মীদের বলা হলে তাঁরা আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও পুর কর্তৃপক্ষ বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছেন না। কেন্দ্রের জন্য প্রতি দিন প্রায় তিনশো মেট্রিক টন বর্জ্য দরকার। কিন্তু পুরসভা একশো মেট্রিক টনের বেশি পাঠাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই তাঁরা কেন্দ্রটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান ওই আধিকারিক। পুরসভা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মেয়র রথীনবাবু বলেন, “বর্জ্যের পরিমাণ এক বারে খুব বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে বাড়াতে হয়। সে ভাবেই এগোনো হচ্ছিল।” তাঁর অভিযোগ, পুরসভার সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ না করে এক তরফা ভাবে ওই সংস্থা কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে শহরের বর্জ্য কোথায় ফেলা হবে তা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি। |
|
|
|
|
|