উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদকে বিধিবদ্ধ ঘোষণার দাবিতে জনমত জোরালো করে লাগাতার আন্দোলনের পরিকল্পনা করেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। শনিবার শিলিগুড়িতে ওই ব্যাপারে বৈঠক করে কমিটি গড়েছেন তাঁরা। কোচবিহার থেকে মালদহ উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যরা ছাড়াও দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর ৫ সদস্য উদয়ন গুহ, জয়ন্ত রায়, হাফিজ আলম সাইরানি, অক্ষয় ঠাকুর ও গোবিন্দ রায় উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহকে সম্পাদক ও জলপাইগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক গোবিন্দ রায়কে প্রচার সচিব হিসাবে দলের কমিটির দায়িত্বে রাখা হয়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে ফের ওই কমিটি কোচবিহারে বৈঠক করবে। সেখানে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে উত্তরবঙ্গের প্রত্যেক জেলায় দলের কর্মী ও নাগরিক কনভেনশনের তারিখ চূড়ান্ত করা করা হবে। তারপরেই দাবি পূরণে পর্যায়ক্রমে তোর্সা থেকে আত্রেয়ী, উত্তরবঙ্গের ছয় জেলা জুড়ে আন্দোলনের পাশাপাশি জনমত গড়ে তোলার কাজে নামবেন ফপরওয়ার্ড ব্লক কর্মী সমর্থকরা। উদয়নবাবু বলেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদে নির্দিষ্ট বিধিনিয়ম না থাকায় যখন যে সরকার থাকছেন তাদের ইচ্ছেমতো কমিটি সাজানো হচ্ছে। ২০০৬ সালে আচমকা ভাইস চেয়ারম্যান পদ তুলে দেয় বাম সরকার। এবার আবার প্রাক্তন এক জনপ্রতিনিধিকে সদস্য করা হয়েছে। কোন খাতে কত টাকা খরচ হবে তারও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। আমরা এসব কিছু নিয়ে বিধি চালু প্রয়োজন বলে মনে করছি। সেজন্য বিধিবদ্ধ উন্নয়ন পর্ষদের দাবিতে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।” ফরওয়ার্ড ব্লকের দাবি, উত্তরবঙ্গের অনুন্নয়ন নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ মেটাতে তাঁদের আন্দোলনের চাপেই ২০০০ সালে বাম সরকার ওই পর্ষদ গঠন করে। তখন সব দলের জয়ী বিধায়করা কমিটির সদস্য হন। ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান হিসাবে উত্তরবঙ্গের প্রবীণ মন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৬ সালে বাম সরকার হলেও আচমকা ভাইস চেয়ারম্যান পদ তুলে দেওয়া হয়। এক ফরওয়ার্ড ব্লক নেতার কথায়, “জনপ্রতিনিধি না থাকলেও নতুন সরকার একজনকে সদস্য করেছে। যদি জনপ্রতিনিধি ছাড়া কাউকে সদস্য করতে হয় তাহলে পরিবেশবিদ, অর্থনীতিবিদ, সমাজসেবীরাও তো আছেন।” সিপিএম ও তৃণমূল শিবিরও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এসবই মানুষকে বিভ্রান্ত করার নাটক। বাম সরকার থাকার সময় তো ওরা এসব বলেনি। আসলে নতুন সরকার আইন মেনে সব কাজ করে। মানুষের কাছে বাড়তি উন্নয়ন পৌঁছবে বুঝে হতাশা থেকে এসব দাবি তোলা হচ্ছে।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “২০০৬ সালে সরকারে ফরওয়ার্ড ব্লকও বাম সরকারে ছিল। তখন রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চুপ থাকার পরে এতদিনে সমালোচনা করাটা অযৌক্তিক।” |