‘জাতীয় দলে’র লক্ষ্যে প্রস্তুতি চালাচ্ছে তৃণমূল
তৃণমূলকে জাতীয় স্তরের দল হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টা আরও উন্নীত হল।
পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটে দলীয় প্রার্থী দাঁড় করিয়ে সেই প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়ার কাজ পুরো দমে শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুরের বিধানসভা ভোটে দলীয় প্রার্থী দাঁড় করানোর বিষয়ে আগামী সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায় জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “মনিপুরে আমাদের এখনই এক জন বিধায়ক আছেন। ওখানে তো এ বার আমরা লড়বই। উত্তরপ্রদেশেও প্রার্থী দেওয়ার জন্য সেখানকার নেতা-কর্মীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। গোয়াতেও আমরা সর্বশক্তি নিয়ে লড়াই করব।”
প্রসঙ্গত, এ দিনই গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উইলফ্রেড ডি’সুজা আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে মুকুলবাবু জানিয়েছেন। গোয়া বিধানসভায় আসন ৪০টি। ওই রাজ্যে এখন কংগ্রেস ক্ষমতাসীন। জোট-সঙ্গী তৃণমূলের সেখানে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা। কত আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে, তা অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মুকুলবাবু বলেন, “গোয়াতে আমরা কত আসনে প্রার্থী দেব, তা ঠিক করার ভার ডি’সুজাকে দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে উনি আমাদের রিপোর্ট দেবেন।” মনিপুরেও এখন কংগ্রেস ক্ষমতায়। মুকুলবাবু ও দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেরই বক্তব্য, এর আগে অসম ও অরুণাচল প্রদেশেও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোটে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। দলীয় এক সূত্রের খবর, বারাণসী, লখনউ, ইলাহাবাদ, কানপুর-সহ পূর্ব ও মধ্য উত্তরপ্রদেশে তৃণমূল প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন, এমনই চাইছেন সেখানকার নেতা-কর্মীরা। তবে মুকুলবাবু বলেন, “পরিস্থিতি পর্যালোচনা না-করে কিছু বলব না।”
পাঁচ রাজ্যের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব ও উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেস ক্ষমতায় নেই। উত্তরপ্রদেশে গত লোকসভা ভোটে মায়াবতীর দলের (তারাই শাসক দল) ভোট কমেছে বিধানসভার তুলনায়। কিন্তু কংগ্রেসের ভোট ও আসন বেড়েছে। উত্তর -পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির মধ্যে মণিপুর, অরুণাচল ও অসমে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি ক্রমশ বাড়ছে বলে দলীয় সূত্রের দাবি। মণিপুর ও অসমে তৃণমূলের এক জন করে এবং অরুণাচলে পাঁচ জন বিধায়ক আছেন। বস্তুত, মাস দু’য়েক আগে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃতীয় বারের জন্য মমতা দলের সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়ার দিন ওই তিন রাজ্যের তৃণমূল নেতা ও বিধায়কেরাই আওয়াজ তুলেছিলেন, জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলই ‘নিয়ন্ত্রক’ হয়ে উঠবে।
দলের নেতাদের বক্তব্যের সূত্র ধরেই তৃণমূল নেত্রী সে দিন স্পষ্ট বলেছিলেন, “জাতীয় দল হতে গেলে কী লাগে! অন্তত চারটে রাজ্যে ভোটে লড়াই করতে হবে। ভোট বৃদ্ধি করতে হবে।” সেই লক্ষ্যে মমতা এক দিকে যেমন দলীয় সংগঠনকে মজবুত করতে সর্ব স্তরে নির্দেশ দিয়েছেন, তেমনই ভিন্ রাজ্যে দলের শাখা সংগঠন বিস্তারেও পরিকল্পনা নিয়েছেন। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে এ দিন দলের এক র্শীষ নেতার বক্তব্য, দল তৈরির ১৪ বছরের মধ্যে যা ‘সাফল্য’ তাঁরা পেয়েছেন, তা ভারতের অন্য কোনও রাজনৈতিক দল ওই সময়ের মধ্যে দেখাতে পারেনি। কংগ্রেস, জনসঙ্ঘ, বিজেপি-র উদাহরণ টেনে ওই নেতার মন্তব্য, “জাতীয় দলের মর্যাদা পেতে কাজ শুরুর এটাই উপযুক্ত সময়। ২০১৪ সালে ভোটে লড়াই করার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করা উচিত। দল প্রতিষ্ঠার ১৪ বছরের মধ্যে আর কোনও রাজনৈতিক দল কোনও রাজ্যে বৃহত্তম দল হিসাবে আমাদের মতো ক্ষমতায় আসতে পারেনি।” তবে এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মুকুলবাবু বলেন, “এখনই কোনও মন্তব্য করছি না। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে আমরা সমস্ত পরিস্থিতি যাচাই করে নিতে চাইছি।”
ফলে, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার ভোট যেমন কংগ্রেসের কাছে কেন্দ্রে ‘কর্তৃত্ব’ ধরে রাখার লড়াই, তেমনই জাতীয় রাজনীতিতে ‘প্রাসঙ্গিক’ হয়ে উঠতে প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.