আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় হাজারখানেক মানুষের পিকনিকে বর্ষারম্ভের প্রথম দিনটিতে মিলনমেলা হয়ে উঠল ভাণ্ডারদহ বিল। রবিবার সারা দিন সেখানে চলেছে বিভিন্ন দলের নিজেদের মধ্যে গানের অন্ত্যাক্ষরী প্রতিযোগিতা, কোথাও ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন বা ছোটদের মধ্যে কোনও খেলা। বেলা বাড়তেই রোদও উঠল ঝকঝকে হয়ে। বিন্দুবাসিনী মন্দিরের সামনে বিলের গা ঘেঁসে সবুজে ঢাকা বিরাট এলাকা এই দিন আনন্দনিকেতন হয়ে ওঠে। জাফরাবাদ, সত্তরপুর, রতনপুর, রাধানগর, পিলখানা, বেতবেড়িয়া, মহিষমারা, ঘোড়ামারা, কালীতলা, মানিকনগর, আনন্দপুর, সাহাপুরের মানুষ এলাকায় কখনও নৌকা নিয়ে কখনও বিলের পাশে নিজেদের মতো জায়গা করে নিয়ে পিকনিকে মত্ত। এলাকার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সনাতন বিশ্বাস বলেন, “আগে এলাকায় পাকা রাস্তা কী, তা লোকে জানত না। এখন বেশিরভাগ রাস্তাই পাকা, বহরমপুর, বেলডাঙা থেকে সরাসরি গাড়ি করে বিলের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়। সারগাছি হয়ে পুলিন্দার মধ্যে দিয়ে, আবার বেলডাঙা থেকে রাজ্য সড়ক ধরে বা বাঁশচাতোরের মধ্যে দিয়েও চলে আসা যায়। তাতেই পিকনিকের রেওয়াজও বেড়েছে।”
কিন্তু ভাণ্ডারদহ বিলে গত কয়েক বছরের মধ্যে দু’টি বড় বড় নৌকাডুবি হয়েছে। সেই বিলেই নৌকা নিয়ে গিয়ে উদ্দাম নৃত্য বিপদের আশঙ্কাই তো বাড়িয়ে দেয়। নৌকাতেই রান্না হচ্ছে। অনেকে মদ্যপানও করেন। বেলডাঙা ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুখেন হালদার বলেন, “বরাবরই এই বিলে নৌকা ভাড়া করে পিকনিক হয়। কিন্তু আমরা ভিড় নিয়ন্ত্রণের উপরে বারবার জোর দিয়েছি। যে নৌকাডুবিগুলো হয়েছে, সেগুলোতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।” বহরমপুরের মহকুমাশাসক অধীর বিশ্বাস বলেন, “প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। কিন্তু মানুষকে বিপদের হাত থেকে উদ্ধার করে তার সচেতনতাই।”
স্থানীয় মানুষের অবশ্য দাবি, প্রশাসনের উচিত আরও সতর্ক থাকা। তেমন ভাবে পুলিশও নজর পড়েনি গোটা এলাকায়। |