গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ তৃণমূলের
প্রকাশ্যে ‘উৎশৃঙ্খল’ আচরণ করছে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের হুইপও মানছে না তারা। কড়া হাতে এই পরিস্থিতির মোকাবিলার উদ্দেশে সিপিএমের ধাঁচে সংগঠন গড়ে তুলতে তৎপর হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। শনিবার মেদিনীপুর শহরের ফেডারেশন হলে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে দলবিরোধী কাজ করলে কড়া শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা-সহ দলীয় বিধায়কেরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “জেলার কয়েকটি এলাকা থেকে বেশ কিছু অভিযোগ আসছে। বৈঠকে গড়বেতা-কেশপুরের পাঁচ কর্মীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকজনকে সতর্ক করা হয়েছে। দলবিরোধী কাজ করলে শাস্তি পেতে হবে।”
সবে সাত মাস হল রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। এরই মধ্যে তাদের ভাবমূর্তি একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এটুকু সময়ের মধ্যেই কেশপুর ব্লক সভাপতি পদে রদবদল আনতে হয়েছে। তাও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এখনও কেশপুরে তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী সক্রিয়। গড়বেতা ব্লক সভাপতিকে আবার দল থেকে বহিষ্কার করতে হয়েছে। শনিবারের বৈঠকে গোষ্ঠী কোন্দলের প্রসঙ্গই বারবার ঘুরেফিরে আসে। বেলা ১টা নাগাদ জেলা কমিটির বৈঠক হয়। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
দীর্ঘ এই চার ঘণ্টার বৈঠকে ঠিক কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে?
দলীয় সূত্রে খবর, পুলিশ-প্রশাসন-সহ বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা, সহায়ক মূল্যে ধান কেনার প্রক্রিয়া মসৃন করা, জঙ্গলমহলে আরও বেশি দলীয় কর্মসূচি সংগঠিত করা এবং দলের একাংশের ‘উৎশৃঙ্খল’ আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি আগামী ৭ জানুয়ারি লালগড়ের সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
বিভিন্ন প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলি পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে। বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার দায়িত্ব দলীয় নেতাদের মধ্যে ভাগ করে দেয় জেলা সিপিএম। যদিও পুরোটাই অলিখিত ভাবে। পুলিশের সঙ্গে এক নেতা যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে অন্য এক নেতা। তৃণমূলে এমনটা চল নেই। তবে, পরিস্থিতি দেখে এ বার এ ভাবেই দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “দায়িত্ব ভাগ করে দিলে সুবিধাই হবে। এখন কোনও ঘটনা ঘটলে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। ফলে, ওই আধিকারিকরাও বিরক্ত হন। দায়িত্ব ভাগ করা হলে আর এই অবস্থা তৈরি হবে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাই পুরো বিষয়টি দেখভাল করবেন।” দলীয় সূত্রে খবর, কে কোন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবেন, তা নিয়ে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত হবে।
এ দিকে, নেতাই-কাণ্ডের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৭ জানুয়ারি লালগড়ে এক সমাবেশ আছে। সভা সফল করতেও জেলা জুড়ে প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “নেতাইয়ের ঘটনাই প্রমাণ করেছিল, সশস্ত্র শিবির করে জঙ্গলমহলে সন্ত্রাস চালাচ্ছে সিপিএম। ৭ তারিখ লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ হবে লালগড়ে। প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।” সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় গতি আনতে প্রশাসনের উপর ‘চাপ’ বাড়ানো হবে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.