নেশার জন্য আয়ুর্বেদিক টনিক,
চোলাই খেয়ে মৃত্যুর অভিযোগ
নেশা করতে ‘আয়ুর্বেদিক টনিক’-এর পরে চোলাই খেয়েছিলেন তিন জন। তাঁদের এক জনের মৃত্যুতে টনিকে বিষক্রিয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ অন্য দু’জন ভর্তি আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে।
আরামবাগের এসডিপিও আকাশ মাগারিয়া বলেন, “মৃত ও অসুস্থেরা একটি বিশেষ ব্র্যান্ডের আয়ুর্বেদিক টনিক কিনে খেয়েছিলেন। তা থেকেই বিষক্রিয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে তাঁরা চোলাইও খান। টনিকের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। তাতে কিছু মেশানো হয়েছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে। মৃতের ভিসেরাও পরীক্ষা হচ্ছে।” হুগলির উপ (১) মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শৈবাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আয়ুর্বেদিক টনিক জাতীয় ওষুধ সাধারণত প্রাণহানিকর নয়। তবে বোতলে অন্য কিছু মেশানো হয়েছে কি না, তা দেখা দরকার।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সকালে অসুস্থ অবস্থায় রামনগরের কোলেপুকুরপাড়ার বাসিন্দা লক্ষ্মণ মালিককে (৪৫) ভর্তি করা হয় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। তাঁর বমি ও কাঁপুনি হচ্ছিল। বিকেলে মারা যান লক্ষ্মণবাবু। হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় বলেন, “মৃতের শরীরে অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছে। তবে বিষক্রিয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে কি না, এখনই বলা সম্ভব নয়।” তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, গ্রামের একটি মনোহারি দোকান থেকে নেশা করতে ওই টনিক কিনেছিলেন লক্ষ্মণবাবু। তাঁর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই সালেপুর, রামনগর, চারমাইল এলাকায় স্থানীয় মহিলারা কয়েকটি দোকানে চড়াও হন। তাঁদের অভিযোগ, সে সব দোকান থেকেই বিক্রি হত ওই টনিক। মৃত লক্ষ্মণবাবুর ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু দোকান মালিকের বিরুদ্ধে মাদক-জাতীয় দ্রব্য বিক্রির অভিযোগে মামলাও রুজু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে কোলেপুকুরেই মৃত্যু হয় শম্ভু কোটাল (৪৮) নামে এক ব্যক্তির। তাঁরও বমি ও খিঁচুনি হচ্ছিল বলে পরিবার সূত্রের খবর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান তিনি। দেহ ময়নাতদন্ত না করিয়েই ফিরিয়ে নিয়ে যান বাড়ির লোকেরা। শম্ভুবাবুও ওই আয়ুর্বেদিক টনিক খেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী সমিতা কোটাল। গ্রামের দোকানে দোকানে ওই টনিক বিক্রি করার দাবি জানিয়েছেন সমিতাদেবীও।
পুলিশ ও আবগারি দফতর সূত্রের খবর, এই ধরনের আয়ুর্বেদিক টনিক নেশার জন্যই খেয়ে থাকেন অনেকে। ইদানীং চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান, ধরপাকড় হচ্ছে বহু জায়গায়। টনিকের বিক্রি তাতে বেড়েছে। বেশি দামে কালোবাজারিও হচ্ছে। লক্ষ্মণবাবুর মৃত্যুর পরে বেশ কিছু দোকানে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। কয়েকটি দোকান সিল করে দেওয়া হয়েছে। আয়ুর্বেদিক টনিকের বেশ কিছু বোতলও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আবগারি দফতরের আরামবাগ শাখার ওসি শ্যামাপদ রাজবংশী বলেন, “এই ওষুধগুলি মানুষ মাদক হিসাবে ব্যবহার করছেন। যেমন একই কারণে অনেকে ফেনসিডিল খেয়ে থাকেন। আয়ুর্বেদিক ওষুধ যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। বিষয়টি ড্রাগ কন্ট্রোল দফতর দেখে।” ড্রাগ কন্ট্রোল দফতরের আরামবাগের সিনিয়র ইন্সপেক্টর সুকুমার দত্ত বলেন, “ফেনসিডিল জাতীয় অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ ড্রাগ কন্ট্রোলের লাইসেন্স ছাড়া বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা নিয়মিত নজরদারিও করি। কিন্তু আয়ুর্বেদিক ওষুধের ক্ষেত্রে বিক্রির জন্য লাইসেন্স লাগে না।” ওষুধ তৈরির জন্য অবশ্য লাইসেন্স লাগে বলে তিনি জানিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.