দুপুরে পার্ক স্ট্রিটের পরে বিকেলে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোড। বছরের প্রথম দিনেই জোড়া আগুনের ঘটনায় দীর্ঘক্ষণ আতঙ্ক ঘিরে থাকল মহানগরের দুই প্রান্তে।
পুলিশ ও দমকল জানিয়েছে, রবিবার দুপুরে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র (এ পি সি) রোডের একটি কাপড়ের শো-রুমে আগুন লাগে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেল পর্যন্ত উত্তেজনা ছিল শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর সংলগ্ন ওই এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহাত্মা গাঁধী রোড ধরে এ পি সি রোডের দিকে যাওয়ার পথে শিয়ালদহ উড়ালপুলের নীচেই ওই শো-রুম। ১৮ নম্বর এ পি সি রোডের দোতলা ওই শো-রুমটি এ দিন বন্ধই ছিল। দুপুর দেড়টা নাগাদ আচমকাই উপরের তলা থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন আশপাশের ছোট দোকানগুলির কর্মীরা। ঠিক পাশের দোকানের মালিক অসীম মিশ্র বলেন, “শো-রুমের গা ঘেঁষেই আমার দোকান। ধোঁয়া বেরোতে দেখেই সন্দেহ হওয়ায় আমি এবং অন্য দোকানিরাই দমকলে খবর দিই।” খবর দেওয়া হয় স্থানীয় মুচিপাড়া থানাতেও।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের সাতটি ইঞ্জিন। দমকলকর্মী ও স্থানীয় দোকানিদের চেষ্টায় ঘণ্টা তিনেক পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। তবে, শো-রুম থেকে আগুন আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়লে যে কী হত, তা ভেবে শিউরে উঠছেন অনেকেই। থান কাপড়ের ওই শো-রুমটি শিয়ালদহ এলাকার পুরনো, পরিচিত দোকান বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার অন্য দোকানিরা। |
দোকানের আগুন নেভাতে দমকলের লড়াই। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র |
এ দিন ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “কলকাতার অন্যতম পুরনো বাজার শিয়ালদহ এলাকা। স্বভাবতই এলাকার বাড়িগুলোও বেশ প্রাচীন। এই সব পুরনো বাড়িতে যখন-তখন আগুন লেগে যাওয়াটা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়।”
প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান, দোকানের দোতলায় এসি মেশিনটিতে শর্ট সার্কিটের জেরেই এই ঘটনা। দমকলের ডেপুটি ডিরেক্টর অসিতকুমার সরকার বলেন, “এসি-র তারে কোনও কারণে শর্ট সার্কিট হয়। পরে মেশিন থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস বেরোতে থাকলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ওই গ্যাসের কারণেই অল্পক্ষণের মধ্যে বেড়ে যায় ধোঁয়ার মাত্রাও।”
ওই শো-রুমে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কি না, থাকলে তা কী অবস্থায় ছিল সে ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কত, সে ব্যাপারে অবশ্য এখনও বিশেষ তথ্য পাওয়া যায়নি। |