সংস্কৃতি যেখানে যেমন...
বাউল
বাউল সম্রাট বলে পরিচিত বীরভূমের বাসিন্দা বাউল পূর্ণ দাস নিজের জেলাকে দেশ-বিদেশে তুলে ধেরেছেন। তাই বীরভূম নামের সঙ্গে বাউল ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। পূর্ণ দাসের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রচুর বাউল এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের অনেকেই বিদেশে বাউল গান পরিবেশন করে সমাদৃত হয়েছেন। তাঁদেরই এক জন হলেন শান্তিনিকেতনের পূর্ব পল্লীর বাসিন্দা রথীন কিস্কু। তিনি শুধু বাংলা ভাষাতেই নয়, সাঁওতালি ভাষাতেও বাউল গান পরিবেশন করে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। ৯ বছর ধরে তিনি বাউল গান গাইছেন। তাঁর প্রথম গুরু স্থানীয় অভয় ভট্টাচার্য। পরে সিউড়ির নিতাই দাস বাউলের কাছে তালিম নিয়েছেন। পাশাপাশি শান্তিনিকেতনের সঙ্গীতভবনের শিক্ষক দিলীপ কর্মকারের কাছে হিন্দুস্তানি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতেরও তালিম নিচ্ছেন।
রথীন কিস্কু।
দিল্লি, কলকাতা, ভূবনেশ্বর, জামসেদপুর প্রভৃতি জায়গা ছাড়াও বিদেশের জার্মানি, ইতালি, হল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতে বাউল গান করেছেন দু’টি ভাষাতেই। তাঁর গায়কির প্রশংসা করেছেন বীরভূমের প্রখ্যাত বাউল তরুণ খ্যাপা ও কার্তিক দাস। বাউল গানের প্রতি আসক্তি থাকলেও আদিবাসী লোক সংস্কৃতির সঙ্গেও যুক্ত রথীন। আদিবাসী লোক সংস্কৃতির দলও রয়েছে তাঁর।

কবিয়াল

রসরাজ মণ্ডল।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কবি’ উপন্যাসের নায়ক নিতাই চরণ একটি তফসিলি জাতির মানুষ। কুখ্যাত চোরের বংশে তার জন্ম। উপন্যাসে রয়েছে নিতাই খুনির দৌহিত্র। ডাকাতের ভাগিনেয়। ঠ্যাঙারের পৌত্র এবং সিঁধেল চোরের ছেলে। কিন্তু নিতাই সাধনার জেরে কবি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। হয়ে ওঠে প্রখ্যাত কবিয়াল। তারাশঙ্কর তাঁর নিজের চোখে দেখা কবিয়াল নিতাইকে (আসল নাম সতীশ ডোম) আবিষ্কার করলেও প্রায় দেড়শো বছর আগে অ্যান্টনী ফিরিঙ্গি ও ভোলাময়রা কবিয়ালের স্বর্ণযুগের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই রাজ্যের সব জেলাতেই কিছু কবিয়াল রয়েছেন। বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের রসুনপুর গ্রামের রসরাজ মণ্ডল ১৮ বছর ধরে বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ প্রভৃতি জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় শতাধিক কবিয়ালের সঙ্গে বাক্যুুদ্ধ করেছেন। এমন কী তাঁর গুরু মুর্শিদাবাদের সবলদহ গ্রামের বৈদ্যনাথ দেবনাথের বিরুদ্ধেও পালা করেছেন। প্রচুর পুরস্কারও পেয়েছেন রসরাজবাবু। পালা করার জন্য প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা করে অনুশীলন করেন, বিভিন্ন বিষয়ের উপরে পড়াশোনা করেন। তাঁর কথায়, “গত ৫ বছরে কবিগানের চাহিদা কমে গিয়েছিল। এখন দিন দিন কদর বাড়ছে।”

বহুরূপী
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসের একটি অনন্য চরিত্র শ্রীনাথ বহুরূপী। শ্রীনাথ এক রাতে মজা করার জন্য বাঘ সেজে মেজদার পড়ার ঘরে ঢুকে হইচই বাধিয়েছিল। তখন বাঘের ভয়ে বাড়ির লোক টতস্থ। বন্দুক আনার আয়োজন চলছিল। ঠিক সেই সময় ওই বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিল ইন্দ্রনাথ। সব শুনে একটি গাছ থেকে বাঘটিকে ধরে এনে সবার সামনে হাজির করেছিল। তখন বাঘরূপী শ্রীনাথ বলেছিল, ‘আমি বাঘ নই, ছিনাথ বহুরূপী।’। সেই বহুরূপীর চল চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। শিশুরা আজও ভয় পায় বহুরূপী দেখেবলেছেন লাভপুর ব্লকের লাওতারা গ্রামের বাসিন্দা জীতেন বৈরাগ্য। বাংলার ১৩৮৫ সাল থেকে তিনি বহুরূপীকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। গোটা বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের কিছু অংশের মানুষ জীতেনবাবুকে চেনেন। রঘুডাকাত, মহিরাবন, কালী ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ সাজতে পারেন নিখঁত ভাবে।

হরবোলা

দুলাল দাস।
সিউড়ির বড়বাগানের বাসিন্দা দুলাল দাস। শিশুদের ঘুমপাড়ানোর সময়ে মায়েরা তাঁর নাম উচ্চারণ করেন। মায়েরা বলেন, ‘ঘুমিয়ে পড়ো। না হলে এক্ষুনি দুলাল দাস আসবে।’ আসলে দুলাল দাস এক জন দক্ষ হরবোলা শিল্পী। তাঁর শেয়াল ডাকার শব্দকে ভয় পায় শিশুরা। শুধু শেয়ালই নয়, যে কোনও পশুপাখি, ট্রেন, বাস, ট্রাম, ঝড়-বৃষ্টি প্রভৃতি শব্দ করতে পারেন তিনি। ১৯৬৮ সাল থেকে এই রাজ্যের বহু জায়গায় তিনি হরবোলার অনুষ্ঠান করেছেন ও করছেন। নাকের সাহায্যে প্রায় আধ ঘণ্টা নিখুঁত ভাবে সানাইয়ের সুর শোনাতে পারেন তিনি। সিউড়ির আনন নাট্য সংস্থার প্রবীন অভিনেতা স্বপন রায় ও ‘এখনই’ নাট্য সংস্থার প্রবীন নির্দেশেক রজ সাহা বলেছেন, “উনি আমাদের বহু নাটকে মুখের শব্দে আবহ সঙ্গীতের কাজ করেছেন।”


• মেয়ে মোনালিসা রক্ষিতকে অকালেই কেড়ে নিয়েছে ক্যানসার। তারই স্মৃতির উদ্দেশে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে ‘মোনালিসা রক্ষিত স্মৃতি অঙ্কন প্রতিযোগিতা’ মা রমা রক্ষিত। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ১৮ ডিসেম্বর সারদামণি মহিলা মহাবিদ্যালয়ে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় ক,খ,গ এবং ঘ বিভাগে প্রায় ৫০০ জন ছাত্রছাত্রী যোগদান করে। প্রথম তিনজন স্থানাধিকারীকে পুরস্কৃত করার পাশাপাশি অন্যান্য যোগদানকারী ছাত্রীদেরও সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়। রমাদেবী বলেন, “মোনালিসা আঁকতে ভালবাসত। ১০ ডিসেম্বর ওর জন্মদিন। তাই ডিসেম্বর মাসে ওই তারিখের পর যে কোন একটা দিন আমরা এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। বিগত ৬ বছর ধরে চলছে এই প্রতিযোগিতা।”

• সারদা মায়ের জন্মতিথি উপলক্ষে পুঞ্চা থানার নির্ভয়পুর পাঠমন্দির বিদ্যালয়ে শুক্রবার দিনভর রামকৃষ্ণ ও সারদা মায়ের জীবনী এবং স্বামী বিবেকানন্দের বাণী আলোচিত হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, “এ দিন স্কুলের পড়ুয়া ও বহিরাগতরা ধর্মীয় সহ্গীত পরিবেশন করেন। পুঞ্চা ও মানবাজার থানার কয়েকশো পূন্যার্থী আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছিলেন।

• মেজিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে ডিএভি পাবলিক স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা নাচ, গান ও নাটক পরিবেশন করে। অধ্যক্ষা ভাবনা সিং বলেন, “স্কুলের ৩৬২ জন ছাত্রছাত্রী যোগ নিয়েছিল। তাদের উৎসাহ দিতে অভিভাবকরাও ছিলেন।”

• বুধবার বিশ্বভারতীর লিপিকা অডিটোরিয়ামে বেঙ্গালুরুর অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শ্রীময়ী মুখোপাধ্যায় নৃত্য প্রদর্শন করে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.