আরব দুনিয়ায় বিদ্রোহের ধাঁচে চিনেও বিদ্রোহে উসকানি দেওয়ার দায়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বছরের শুরুতেই। এ বার রাষ্ট্রশক্তিকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে লেখক চেন ওয়েইকে ন’বছরের কারাদণ্ড দিল চিনের আদালত।
একই অভিযোগে ২০০৯ সাল থেকে জেল খাটছেন নোবেলজয়ী মানবাধিকার কর্মী লিউ জিয়াবো। তাঁর ১১ বছরের জেল হয়েছে। এ বছরের মার্চেই আর এক বিক্ষুব্ধ লিউ জিয়ান বিনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার পর এই রায়।
চেন ওয়েই |
চিনে গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিতে চার্টার-০৮ নামে যে ইস্তেহার লিখেছিলেন জিয়াবো, তাতে সই করেছিলেন চেন। এ ছাড়া, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ হিসেবে বিদেশি ওয়েবসাইটে তাঁর ন’টি প্রবন্ধ পেশ করা হয়েছে। সেখানে তিনি সরকারের সমালোচনা এবং নাগরিক সমাজের উত্থানকে সমর্থন করেছিলেন। স্ত্রী ওয়াং ডিয়াওইয়ান সংবাদসংস্থাকে বলেন, চেন দেশে বিদ্রোহ ওসকাচ্ছেন বলে অভিযোগ। অথচ চিন সরকার ওয়েবসাইটগুলো আটকে দেওয়ায় দেশেই তাঁর ওই সব লেখা কেউই পড়তে পারেনি। তাঁর মন্তব্য, “বিচারের নামে নাটক হয়েছে। চেন রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন না। কারণ, শাস্তি তো আগেই ঠিক করা হয়ে গিয়েছিল।” চেনের কৌঁসুলিরাও বিভিন্ন সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, এ দিন শুনানি হয়েছে মাত্র আড়াই ঘণ্টা। এবং তাঁদের বলাই হয়েছিল, সওয়াল যেন যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত হয়। রায়ের পরে ৪২ বছর বয়সী চেন বলেন, “এক দিন চিনে গণতন্ত্র আসবেই, একনায়কতন্ত্রের পতন হবেই।” ১৯৮৯ সালে তিয়েন আন মেন স্কোয়্যারে যে আন্দোলনকে ট্যাঙ্ক নামিয়ে দমন করেছিল বেজিং, সেই সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন চেনও। পরের বছর তিনি ছাড়া পান। এ বার আরব দুনিয়ায় বিদ্রোহ ছড়ানোর পরে চিনে গণতন্ত্রের দাবিতে ওয়েবসাইটে প্রচার শুরু হয়। দু’একটি জায়গায় নামমাত্র জমায়েতও হয়। পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম যাকে বর্ণনা করতে শুরু করে ‘জেসমিন রেভলিউশন’ নামে। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে বেজিং। গ্রেফতার করা হয় চেনকেও। চেনের বন্ধু এবং মানবাধিকার কর্মী হুয়াং কুই সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানান, ২০০৮-এ সিচুয়ানে ভূমিকম্পে মৃত শিশুদের বাবা-মাকে সরকারি সাহায্যের দাবিতে প্রচার করেন চেন। এমন অনেক প্রচারে চটে ছিলেন কর্তারা। |