সিপিএম সদস্যদের ভোটে প্রধান নির্বাচিত হলেন পঞ্চায়েতের একমাত্র তৃণমূল সদস্য। খণ্ডঘোষের শাঁখারি ১ পঞ্চায়েতে শুক্রবার ছিল প্রধান নির্বাচনের দিন। ৪-৩ ভোটের ব্যবধানে জিতে প্রধান হয়েছেন তৃণমূল সদস্য সমীর ঘোষ। এ দিন বিডিও-র এক প্রতিনিধির প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এই ফল প্রকাশ করা হয়।
২০০৮ সালের এই পঞ্চায়েতের মোট ১১টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনে জয়ী হন সিপিএম প্রার্থীরা। একটি করে আসন পায় তৃণমূল, পিডিসিআই এবং নির্দল। বোর্ড গঠন করে সিপিএম। প্রধান হন ওই দলের মহম্মদ ইসলাম। কিন্তু কিছু দিন আগে পদত্যাগ করেন তিনি। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, পঞ্চায়েতের গাছ বিলিকে ও কাটাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন মহম্মদ ইসলাম। সিপিএমের উপপ্রধান সুভাষ সেনের অভিযোগ, “এই ঘটনার পরেই তাঁকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া শুরু হয়। গত ৬ ডিসেম্বর তিনি বিডিও-র কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। ১২ ডিসেম্বর সেটি গৃহীত হয়। সে জন্যই প্রধান পদে নির্বাচন হয়।”
এ দিন পঞ্চায়েতের ব্লক অডিট অফিসার তথা বিডিও-র প্রতিনিধি শঙ্কর দাসের উপস্থিতিতে ভোটাভুটির সময় অবশ্য সিপিএমের পদত্যাগী প্রধান-সহ সিপিএমের চার জন সদস্য হাজির ছিলেন না। প্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় অংশ নেন সাত জন সদস্য। তাতে ৪-৩ ফলে সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী সবর আলিকে হারিয়ে জয়ী হন সমীরবাবু। |
বিডিও-র প্রতিনিধি শঙ্করবাবু বলেন, “প্রধান ছাড়া পঞ্চায়েত চলে না। তাই যে ক’জন সদস্য হাজির হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেই ভোটাভুটি হয়। সমীর ঘোষ জিতেছেন।” উপ-প্রধান সুভাষবাবু বলেন, ‘‘এ দিন প্রধান পদের জন্য ভোটাভুটিতে যোগ দেওয়ার জন্য আমাদের সাত জনকেই পঞ্চায়েতে উপস্থিত থাকতে দলের তরফে হুইপ জারি করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দলের তিন জন আসেননি। যাঁরা এসেছিলন, তাঁদের মধ্যে আমাদের টিকিটে জেতা দুই সদস্য কাজল মাঝি ও তাঞ্জিয়া বেগম তৃণমূল সদস্য সমীরবাবুকে ভোট দেন। তারই জেরে সমীরবাবু জিতেছেন।”
তৃণমূল সদস্যকে ভোট দেওয়া প্রসঙ্গে তাঞ্জিয়া বেগমের দাবি, “আমার পুরনো দলের তরফে নির্দল প্রার্থী সবর আলিকে ভোট দিতে বলা হয়। কিন্তু রাজ্যে তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায়, তাই প্রধান পদে তৃণমূলের লোক না এলে উন্নয়ন হবে না। তাই আমি এলাকায় কাজের লোক বলে পরিচিত সমীরবাবুকে ভোট দিয়েছি। তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দিতে আমার উপরে কেউ জবরদস্তি করেনি।” তৃণমূলের নতুন প্রধান সমীরবাবু শুধু বলেন, “সিপিএমের দুই সদস্য আমাকে সমর্থন করায় জিততে সুবিধা হয়েছে।” সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য মহফুজ রহমান বলেছেন, “আমাদের দু’জন তৃণমূল সদস্যকে ভোট দিয়েছেন বলে শুনেছি। তবে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়নি। কেন এমন হয়েছে, খোঁজ নিচ্ছি।” |