ক্রমেই পারদ নামছে দুই জেলায়
বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। সারা দিন ঝলমলে রোদ থাকলেও বিকেল থেকেই পারদ নামছে। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়া হাড়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। বাইরে কাজ মিটিয়ে অনেকে সাত তাড়াতাড়ি বাড়িতে ঢুকে পড়ছেন। আর ঠান্ডা বাড়তেই পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে দুই জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে।
বাঁকুড়া জেলা আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর ১৫ ডিসেম্বরের পর থেকে ঠান্ডা বেড়েছে। কয়েক দিন ধরেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গিয়েছে। তার মধ্যেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ওঠা-নামা করলেও বুধবার থেকে পারদ নিম্মমুখী। বুধবার সর্বনিম্ম তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার তা নেমে যায়, ৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আবহাওয়া দফতরের মতে, ঠান্ডা হাওয়ার দাপট বাড়ায় শীতও বেড়ে গিয়েছে। পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, এ দিন জেলার সর্বনিম্ম তাপমাত্রা ছিল ৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ মরশুমের সর্বনিম্ম তাপমাত্রা ছিল বুধবার, ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাঁকুড়ায় অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি। পুরুলিয়ায় ছবিটি তুলেছেন প্রদীপ মাহাতো।
পুরুলিয়া জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা অশ্বিনীকুমার কুণ্ডুর মতে, “বিগত কয়েক বছরে এত তাড়াতাড়ি পুরুলিয়া জেলায় এত তাপমাত্রা কমে না। এ সময় ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে সর্বনিম্ম তাপমাত্রা থাকে। ঝাড়খণ্ডে শৈত্য প্রবাহ চলছে বলেই তার প্রভাব এখানে পড়েছে।”
হঠাৎ করে ঠান্ডা পড়ায় সকাল সাড়ে ন’টার আগে পুরুলিয়া শহরে লোক চলাচল কম দেখা যাচ্ছে। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শহরে রাত আটটার পরে রাস্তায় লোক চলাচল কমে যাচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ীও খদ্দেরের অপেক্ষায় না থেকে দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে দিচ্ছেন। গ্রামের দিকেও একই ছবি। বাজার এলাকায় সন্ধ্যার আড্ডা বেশি ক্ষণ চলছে না। নিতান্তই প্রয়োজনের তাগিদে যাঁরা রাস্তায় বেরোচ্ছেন, তাঁরাও সোয়েটার, টুপি, মাফলার, দস্তানা, মোজায় শরীর ঢেকে কোনওরকমে চলাচল করছেন। রাত একটু গড়াতেই পাড়া শুনশান হয়ে যাচ্ছে। অনেক এলাকায় কাঠ জ্বেলে আগুনে ঘিরে হাত গরম করতে দেখা যাচ্ছে। আলো জ্বেলে বিভিন্ন পাড়ায় ‘ব্যাটমিন্টন’ খেলাও চলছে। সোয়েটার-চাদর কেনাও বেড়ে গিয়েছে। প্রতি বছরের মতো এ বারও বাঁকুড়া জেলাশাসকের অফিস চত্বরে শীত বস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ীরা বসে পড়েছেন। পুরুলিয়া শহরের দোকানগুলিতে শীতবস্ত্র কিনতে গ্রাম-গঞ্জ থেকে ক্রেতারা আসছেন। তবে এ বার শীতে কুয়াশা বেশি বেলা পর্যন্ত স্থায়ী না হওয়ায় চাষের জমিতে পোকা-মাকড়ের উপদ্রব অনেক কম। মাঠ থেকে এখনও আলু তোলা হয়নি। শীতকালীন সব্জিও রয়েছে। বাঁকুড়া জেলা কৃষি দফতরের উপ অধিকর্তা অনন্ত হাজরা বলেন, “এ বছর শীতে ফলন ভাল হচ্ছে। এর কারণ, এ বছর কুয়াশা কম। ফলে খেতে পোকার আক্রমণ অনেক কম। ফসলের বৃদ্ধির জন্য এই শীত সহায়ক।” তাঁর আশা, আবহাওয়া আগামী কয়েক সপ্তাহ এরকম থাকলে শীতকালীন সব্জির ফলন ভাল হবে।
শীতের আমেজ উপভোগ করতে অনেকে দল বেঁধে চড়ুইভাতিতে মেতে উঠেছেন। শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষ্ণুপুর ও মুকুটমনিপুরের মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছেন। সপ্তাহের মাঝে বৃহস্পতিবারও মুকুটমনিপুর জলাধারের পাশে বহু মানুষকে চড়ুইভাতি করতে দেখা গিয়েছে। জলাধারে নৌকাবিহারের পাশাপাশি পর্যটকেরা লাগোয়া পরেশনাথ মন্দির ও বনপুকুরিয়া ডিয়ারপার্কে বেড়াচ্ছেন। পর্যটক পেয়ে তাই খুশি নৌকাচালক সুদর্শন গরাই, হোটেল মালিক সুদীপ সাহু’রা। বিষ্ণুপুরেও জোড়বাংলা, শ্যামরাই মন্দির, মদনমোহন মন্দিরে আট থেকে আশির ভিড় বেড়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.