চোট সত্ত্বেও প্রয়োজনে আজ ব্যাট করবেন
অধিনায়কের সৌরভে মুঠোয় তিন পয়েন্ট
ফিনিশিং লাইন সামান্য দূরে। আর চাই মাত্র ২১। হাতে পড়ে ছ’ উইকেট। তা হলেই আসবে বহু প্রতীক্ষিত তিন পয়েন্ট, বাঁচবে অবনমন। এই পর্যন্ত সাফল্যের সহজ স্ক্রিপ্ট বলেই মনে হবে।
মুশকিল হচ্ছে, শুকনো তথ্য বা স্কোরবোর্ডকোনও কিছুতেই লেখা নেই কতটা মরিয়া যুদ্ধ এর পিছনে লুকিয়ে। এক দিকে, চল্লিশ ছুঁইছুঁই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। চূড়ান্ত বিপদে-আপদে বাংলা যাঁর দিকে এখনও তাকিয়ে থাকে। অন্য দিকে অনুষ্টুপ মজুমদার। যাঁর জীবনে ভাল খেলেও বাদ পড়াটা হালফিলে অতি স্বাভাবিক ঘটনা। ঘটনা হল, অবনমনের অন্ধকার থেকে বাংলা বেরোতেই পারত না যদি না আজ অক্সিজেন দিতেন এই দু’জন।
২৮৪ তাড়া করতে গিয়ে যে ভাবে ৯৭-৪ হয়ে গিয়েছিল বাংলা!
সৌরভ ব্যাটে যেমন, বলে তেমন। অশোক দিন্দা বা সৌরভ সরকারের দরকার পড়েনি, বৃহস্পতিবার বোলার সৌরভই পর্দা ফেলে দেন বরোদা ইনিংসের। গত কালের স্কোরেই গুটিয়ে যায় বরোদা। আর রান তাড়া করতে গিয়ে যখন ফের ধুঁকছে বাংলা, যখন অরিন্দম দাস (১৭)-শ্রীবৎস গোস্বামী (৩৮) এমনকী মনোজ তিওয়ারিও (৯) ব্যর্থ, তখন ফের ব্যাট হাতে তাঁর রুখে দাঁড়ানো। কাজ সহজ ছিল না। মোতিবাগের উইকেটে বল সুইং করেছে সারা দিন। গগনদীপ সিংহের পেস উইকেটও তুলেছে। কিন্তু তাতে বাংলা অধিনায়ক পাত্তা দিলে তো? ১২০ বলে ৬০, কিন্তু সেটা ইনিংসের মাঝপথে হ্যামস্ট্রিংয়ের টানে মাঝপথে উঠে যেতে হল বলে। নইলে আজই স্কোরটা ৮০ কিংবা সেঞ্চুরির গণ্ডি ছুঁয়ে ফেললে অবাক হওয়ার থাকত না। অফস্টাম্পের বাইরের প্রলোভন, শর্ট পিচ বল, সব অস্ত্রই একে-একে সৌরভের উপর পরীক্ষা করে দেখেছে ইরফান পাঠান অ্যান্ড কোম্পানি। আর পরিণাম? ইরফানকেই উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা যাক। ওভারে নিয়ম করে এ দিন প্রায় দু’টো বাউন্ডারি তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল! ২০ ওভারে ৫৯ রান খরচ করে একটা উইকেটও এ দিন তুলতে পারেননি ইরফান।
অধিনায়কের সৌরভে বাংলা শিবির নিশ্চিন্ত। বলেই দেওয়া হচ্ছে, হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট মোটেই মারাত্মক কিছু নয়। আজ সকালে দরকার পড়লে ফের নেমে পড়তে অসুবিধা নেই সৌরভের। টিম ম্যানেজমেন্ট বরং মুগ্ধ অনুষ্টুপকে দেখে। চলতি মরসুমে তাঁকে একবারও ভাবা হয়নি। এই ম্যাচটাও খেলা হত না যদি শুভময় দাস ফিট থাকতেন। আর খেললেন যখন? অধিনায়কের ঢালাও সার্টিফিকেট, নির্বাচকদের পিঠ চাপড়ানি সব এল একে-একে। চাপের মুখে অসাধারণ ৭১ ন:আ: থাকলে যা হয়!
বরোদা থেকে ফোনে এক নির্বাচক বলেই ফেললেন, “আজ পর্যন্ত অনুষ্টুপের এটাই সেরা ইনিংস।” যদিও চাপের মুখে ভাল খেলাটা অনুষ্টুপের কাছে নতুন নয়। বছর দু’য়েক আগে রঞ্জি একদিনের ফাইনালেও একটা সাহসী ইনিংস খেলেছিলেন। “আসলে কঠিন পরিস্থিতিতে রান পাওয়ার সুবিধাটা হচ্ছে, নিজেকে প্রমাণ করা যায়,” এ দিন বরোদা থেকে ফোনে বলছিলেন অনুষ্টুপ। নেমে কিছুটা চাপে ছিলেন। কারণ, তিনি ফিরে গেলে স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে থাকতেন শুধু লক্ষ্মীরতন শুক্ল। বলছিলেন, “অনেক দিন ম্যাচ খেলিনি। তা ছাড়া বল মুভ করছিল। তবে উল্টো দিকে দাদা থাকলে সাহসটা আসে আপনাআপনি।”
কী দাঁড়াল? ২১-টা রান আর সময়ের অপেক্ষা মাত্র। প্রশ্নটা হচ্ছে, পাঁচ পয়েন্ট হবে কি না? হাতে পড়ে দু’দিন। তাই মোটেই অসম্ভব নয়। শুক্রবার সকালে সবার আগে দরকার ঝোড়ো গতিতে রান তুলে দান ছাড়া। আর লক্ষ্মীতন শুক্লও কিন্তু মেজাজে ফিরছেন!

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বরোদা ২৮৪ (দিন্দা ৫-৯৬, সৌরভ ৩-১)
বাংলা ২৬৪-৪ (সৌরভ অবসৃত ৬০, অনুষ্টুপ ব্যাটিং ৭১, লক্ষ্মী ৩৭ ব্যাটিং)




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.