|
|
|
|
রিষড়ায় জি টি রোড |
রাস্তা সারানোর দাবিতে সাড়ে ৮ ঘণ্টা অবরোধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রিষড়া |
একে ভাঙাচোরা রাস্তা। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো জলের পাইপ ফেটে যাওয়ায় রাস্তার খানাখন্দ জলে উপছে পড়ছে। পুকুরের চেহারা নিচ্ছে রাস্তা। কোনও পাড়ার রাস্তার চিত্র নয়, এই ছবি জিটি রোডের। এই বেহাল রাস্তা সারানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার রিষড়া ফাঁড়ির সামনে প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত রাতে তাঁদের সামনেই পাইপ সারানোর কাজ শুরু হয়। পূর্ত (সড়ক) দফতরের তরফেও দ্রুত রাস্তা মেরামতির আশ্বাস দেওয়া হয়। |
|
ছবি: প্রকাশ পাল। |
দীর্ঘদিন ধরেই হুগলির বিস্তীর্ণ জায়গায় জিটি রোডের অবস্থা বেহাল। গাড়ি-চালকদের কাছে তো বটেই, পথচারীদের কাছেও বিভীষিকা হয়ে দাঁড়াচ্ছে রাস্তাটি। খারাপ রাস্তার কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে। কয়েক মাস আগে বৈদ্যবাটিতে তৃণমূলের তরফে এবং এক ফিজিওথেরাপিস্টের উদ্যোগে হুগলি মোড় থেকে বৈদ্যবাটি পর্যন্ত জিটি রোডে তাপ্পি দেওয়া হয়। সেই সময় জেলা পূর্ত দফতরের শীর্ষ আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, বর্ষা শেষ হলেই জিটি রোড সংস্কার করা হবে। বর্ষা শেষ হয়ে শীতকাল উপস্থিত। এখনও সব জায়গায় সংস্কার হয়নি জিটি রোডের। আর, তা না হওয়ায় আরও খারাপ হয়েছে রাস্তার হাল। এর জেরে যানজটও বেড়েছে।
রিষড়া ফাঁড়ির অদূরে এবং বাঁশতলায় জিটি রোড জুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। রাস্তার ধার দিয়ে শ্রীরামপুর থেকে জলের পাইপ লাইন গিয়েছে হাওড়ার বালিতে। প্রশাসন সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন আগে ফাঁড়ির কাছে সেই পাইপ ফেটে যায়। ফলে, জায়গাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনু আচার্য, প্রদীপ সাহাদের অভিযোগ, “পাইপ লাইনের জল রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। জলের তোড়ে রাস্তার পিচ তো বটেই, পাথর পর্যন্ত খুলে বেড়িয়ে এসেছে। রোজ দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা সব জায়গায় জানিয়েছি রাস্তা সারাইয়ের জন্য। সবাই আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।” এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাস্তায় বাঁশ ফেলে, বেঞ্চ-চেয়ার পেতে শুধু অবরোধ করাই নয়, রাস্তায় রান্না-খাওয়াও সারেন অবরোধকারীরা। রাস্তার দু’দিকে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। রিষড়া থানার ওসি অনুদ্যুতি মজুমদার বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু অবরোধ ওঠেনি। যে সমস্ত রুটের বাস ওই জায়গার উপর দিয়ে যায়, সেগুলিকে বাগখালেই আটকে পড়তে হয়। বাগখাল থেকেই বাস চলে। অন্যান্য যানবাহন অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ আধিকারিকরা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিতে যোগাযোগ করেন। শ্রীরামপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে এক জন ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে আসেন। বালি এবং রিষড়া পুরসভার অফিসাররাও পৌঁছন। আসেন শ্রীরামপুরের এসডিপিও রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বালি পুরসভার সঙ্গে হুগলির সংশ্লিষ্ট দফতরের টানাপোড়েনে পাইপ ও রাস্তা সারানোর কাজে দেরি হচ্ছিল। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে সন্ধ্যায় পাইপ লাইন মেরামতের কাজ শুরু হতে অবরোধ ওঠে। শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, “পাইপ লাইন সারানোর কাজ শুরু হয়েছে। এর পরে রিষড়া এবং বালি পুরসভাকে নিয়ে যৌথ ভাবে দেখা হবে। তার পরেই যত শীঘ্র সম্ভব রাস্তাও সারানো হবে।” পূর্ত দফতরের হুগলি জেলার নির্বাহী বাস্তুকার পার্থপ্রতিম সিংহ বলেন, “যতদূর শুনেছি, পাইপ লাইনের কারণেই বিক্ষোভ হয়েছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে রিষড়ায় জিটি রোড মেরামতের কাজ শুরু হবে।” |
|
|
|
|
|