হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড
পরীক্ষা দেওয়া হল না মামনির
কাল ৭টা হবে। খবরটা টেলিফোনে পৌঁছে গিয়েছিল, আদরের ‘মামনি’ আর নেই।
কোতুলপুর থানার বেশরা গ্রামের বাসিন্দা প্রাকৃতা পাল (১৫)। সোমবার পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ে মোটরবাইক থেকে পড়ে গিয়ে সে মাথায় চোট পায়। শুক্রবার তার মৃত্যু হয়েছে। বিকেল ৫টা নাগাদ জয়রামবাটী ঢোকার ৪ কিলোমিটার আগে বেশরা গ্রামে প্রাকৃতার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির ভিতরে ও বাইরে আত্মীয়পরিজন-পাড়াপড়শিদের ভিড়। দোতলা পাকা বাড়ি তখন কান্নার শব্দে ভরপুর। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা রীনাদেবী, ঠাকুমা করুণাদেবী। বাড়ির মহিলারা একে অন্যকে ধরে কাঁদছেন।
কথা বলার মতো অবস্থায় নেই কেউই। জড়ো হওয়া লোকজনদের কাছ থেকে জানা গেল, রামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যাপীঠের নবম শ্রেণির ছাত্রী মামনি সোমবার বাবা ধনঞ্জয় পালের মোটরবাইকে করে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল। ওই দিন তার ধর্ম বিষয়ক পরীক্ষা ছিল। স্কুলে যাওয়ার রাস্তাটা খারাপ ছিল। স্কুলের ঢোকার কিছুটা আগে আমোদরের সেতুর কাছে কোনও ভাবে মামনি বাইক থেকে ছিটকে পড়ে। মাথায় গুরুতর চোট পায়। মাথায় আঘাত লাগায় সে অজ্ঞান হয়ে যায়। দেরি না করে বাইক ঘুরিয়ে ধনঞ্জয়বাবু মেয়েকে স্থানীয় কামারপুকুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পরে তিনি মেয়েকে বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরিস্থিতি ভাল নয় দেখে চিকিৎসকেরা প্রাকৃতাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে দেন। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ ও পিজিতে জায়গা না পাওয়ায় বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ প্রাকৃতাকে আমরিতে ভর্তি করেন ধনঞ্জয়বাবু। প্রাকৃতার বড় জ্যাঠামশাই মনোরঞ্জন পাল বলেন, “ভাইঝি আমরির জরুরি বিভাগের ৫ তলায় ছিল। চিকিৎসকেরা জানান, মাথায় স্ক্যান করতে হবে। চিকিৎসকেরা পরামর্শ মতো সব পরীক্ষা করানো হয়। মঙ্গলবার তার জ্ঞান ফেরে। চিকিৎসায় ভাল সাড়াও পাওয়া যাচ্ছিল। ওই দিন থেকে কথাও বলছিল সে। কিন্তু হঠাৎ এই আগুন কেড়ে নিল আমাদের আদরের মামনিকে।”
প্রাকৃতার শোকার্ত পরিবার। ছবি: শুভ্র মিত্র।
প্রাকৃতার মৃত্যুর খবর পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় তার বাড়িতে আসেন স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক রাজকুমার পতিঙ্গি, সহপঠীরা। রাজকুমারবাবু বলেন, “পড়ায় সে ভাল ছিল। আঁকা ও গানবাজনাতেও পারদর্শী ছিল প্রাকৃতা। এ ভাবে চলে যাবে ভাবতে পারিনি।” আর সহপাঠী শুক্লা বেজ, শিবানী সেনদের কথায়, “প্রাকৃতা সব সময় হাসিখুসি মুখে থাকত। বরাবর স্কুলের ১ থেকে ১২ মধ্যে তার নাম থাকত। এ ভাবে চলে যাবে ভাবতে কেমন লাগছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.

5