সিরিজটার পক্ষে ভাল যে, শেষ পর্যন্ত একটা ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতল। যার অর্থ সিরিজটা বেঁচে রইল। ভারতের পক্ষে দুঃসংবাদ বলতে, যে ম্যাচ সহজে জেতা উচিত ছিল, সেই ম্যাচে হারতে হল।
রোহিত শর্মা যে অসম্ভব প্রতিভাবান একজন ক্রিকেটার, সবাই জানে। প্রশ্ন ছিল, প্রতিভার সদ্ব্যবহার করতে পারে কি না। বিশ্বকাপের পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছিল, এই সিরিজেও ম্যান অব দ্য সিরিজ হিসেবে অন্য কাউকে এখনও পর্যন্ত ভাবা যাচ্ছে না। অবিশ্বাস্য ফর্মে আছে, এই নিয়ে টানা তিনটে ম্যাচে ভারতের ব্যাটিংকে টানল। ওর দুর্ভাগ্য, ৯৫ রানের অত দামি ইনিংসটা খেলার পরে স্যামির ডাইরেক্ট থ্রোতে রান আউট হতে হল।
মনে রাখা দরকার, এক সময় ভারতের স্কোর ছিল ১০৫-৬। সেখান থেকে অশ্বিনকে সঙ্গী করে একা টানছিল রোহিত। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। রোহিত আউট হয়ে যাওয়ার পরেই ম্যাচের কার্যত নিষ্পত্তি হয়ে যায়। মিঠুন আর যাদব যথেষ্ট চেষ্টা করলেও ওরা জেতাবে আশা করাটা বাড়াবাড়ি। |
ভারতীয় বোলিংয়ের অনভিজ্ঞতা মোতেরার ম্যাচেও বারবার ধরা পড়ল। শেষ দশ ওভারে উঠল ১০৬ রান। বেধড়ক মারল রাসেল আর ডারেন স্যামি। ভারতীয় বোলিংয়ের সমস্যা হল, প্রতিদিনই একজন না একজন মার খেয়ে যাচ্ছে। কোন ওদিন অশ্বিন, কোনও দিন বরুণ অ্যারন, কোনও দিন উমেশ যাদব।
মোতেরায় যেমন মার খেতে হল উমেশকে। ও নিশ্চয়ই বুঝবে ক্রিকেটে কারও সব দিন সমান যায় না। উত্থান-পতন আসবেই। সবচেয়ে বড় কথা, উমেশ, বিনয় বা বরুণরা সবে শুরু করেছে। দলে নিয়মিত হতে হলে এখনও অনেক রাস্তা পেরোতে হবে। স্লগ ওভারে ইয়র্কার যে কোনও পেসারের অন্যতম অস্ত্র। নিখুঁত ইয়র্কার একদিনে শেখা যায় না, ধীরে ধীরে তা আয়ত্ত করতে হয়। ভারতের অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ স্লগ ওভারেও অধিকাংশ সময় লেংথ বল করে গেল। মনে রাখা দরকার, এই দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে নয়, ওদের আসল পরীক্ষা হবে অস্ট্রেলিয়ায়।
কটকে জেতা ম্যাচ প্রায় হারতে বসেছিল ভারত। এখানেও দেখলাম, ভারতীয় ব্যাটিং শুরুতে যথারীতি নড়বড়ে। আরও আশ্চর্যজনক, প্রথম তিনটে ম্যাচের একটাতেও রান পেল না সহবাগ আর গম্ভীর। প্রথম তিনটে ম্যাচে সহবাগ করেছে মোট ৪৬। গম্ভীর আরও খারাপ। তিন ম্যাচে মোট রান ১৬! এর আগের দিন ম্যাচ রিপোর্টে লিখেছিলাম, অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে সহবাগ-গম্ভীর, দু’জনেরই ফর্মে না থাকাটা খুব উদ্বেগের। বিশেষ করে গম্ভীর। সব বলেই দেখছি, ও ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে নেটে পরিশ্রম করে এই ভুল শুধরোনো দরকার।
শুধু ব্যাকফুটে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় কিন্তু ক্রিকেটটা খেলা যাবে না। যদি বাকি দুটো ওয়ান ডে ম্যাচে রান না পায়, তা হলে কিন্তু ওয়ান ডে টিমে গম্ভীরের জায়গা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। বিশেষ করে সচিন ও যুবরাজ ফিরে এলে। কারণ, রোহিত শর্মাকে এখন কে বসাবে?
|
মোতেরার স্কোর |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
সিমন্স ক পার্থিব বো বিনয় ১
হায়াত ক পার্থিব বো মিঠুন ২০
স্যামুয়েলস বো অশ্বিন ৫৮
ব্র্যাভো আহত ও অবসৃত ২৬
রামদিন ক পার্থিব বো উমেশ ৩৮
পোলার্ড ক জাডেজা বো বিনয় ২৯
রাসেল ন.আ. ৪০
স্যামি ন.আ. ৪১
অতিরিক্ত ৭
মোট (৫০ ওভারে) ২৬০-৫।
পতন: ২, ৪২, ১২২, ১৭৭, ১৮১।
বোলিং: বিনয় ৮-১-৩৯-২, উমেশ ৯-১-৭৫-১, মিঠুন ৭-০-৪৭-১
জাডেজা ১০-১-৩৭-০ অশ্বিন ১০-০-৩৩-১, রায়না ৬-০-২৭-০।
|
ভারত
|
পার্থিব বো স্যামুয়েলস ৩৯
সহবাগ ক রামদিন বো রামপল ০
গম্ভীর এলবিডব্লিউ রামপল ০
কোহলি এলবিডব্লিউ নারায়ণ ২০
রোহিত রান আউট ৯৫
রায়না ক রামদিন বো রামপল ২
জাডেজা রান আউট ১১
অশ্বিন এলবিডব্লিউ নায়ারণ ৩১
বিনয় বো রোচ ৩
মিঠুন এলবিডব্লিউ রামপল ২৩
উমেশ ন.আ. ১১
অতিরিক্ত ৯
মোট (৪৬.৫ ওভারে) ২৪৪ অল আউট।
পতন: ৮, ৮, ৪৩, ৭৯, ৮৪, ১০৫, ১৯৬, ২০০, ২১৬।
বোলিং: রোচ ১০-০-৫৪-১, রামপল ৮.৫-১-৫৭-৪, নারায়ণ ১০-০-৩৪-২,
স্যামুয়েলস ১০-০-৫০-১ রাসেল ৪-০-২৫-০, স্যামি ১-০-৭-০,
সিমন্স ২-০-১০-০, পোলার্ড ১-০-৪-০। |
|
|