ভারত-৫ (ক্লিফোর্ড-২, সুনীল-২, নবি-১)
ভুটান-০ |
জিততে মরিয়া ছিলেন স্যাভিও মেদেইরা। জিতলেন। বড় ব্যবধানে জিততে চেয়েছিলেন। একতরফা খেলে সুনীল ছেত্রী, ক্লিফোর্ড মিরান্ডা, রহিম নবি-রা পাঁচ গোলে ভুটানকে চূর্ণ করলেন। সাফ কাপের দ্বিতীয় ম্যাচের পরে চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ শীর্ষে চলে গেল ভারত। কার্যত সেমিফাইনালেও।
ভারতীয় দল প্রচুর দৌড়াল এ দিন। সেই দৌড়কে সামাল দিতে কখনও ছয়, কখনও আট জনকে ডিফেন্সে নামিয়ে আনেন ভুটানের জাপানি কোচ হিরোয়াকি মাৎসুয়ামা। তাতেও সুনীলদের গোলের বন্যা আটকানো যায়নি। ভুটানের সাদামাঠা ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে ক্লাইম্যাক্স-জেজেরা খেলা একটু গড়াতেই চেপে ধরে বিপক্ষকে। বাঁ-প্রান্ত দিয়ে ওভারল্যাপে গিয়ে নবি দু’বার বিপক্ষ ডিফেন্সকে ধোঁকা দিয়েও অফসাইডের জন্য গোল পাননি। দ্বিতীয়ার্ধে একবার প্রচণ্ড গতিতে তিন জনকে কাটিয়েও দুর্ভাগ্যবশত গোলকিপারের গায়ে মেরে বসেন নবি। |
এতগুলো সুযোগ নষ্ট করলেও নবি-ই কিন্তু ভারতকে প্রথম গোলটা এনে দেন। সেখান থেকেই শুরু গোলের বন্যা। ২৯ মিনিটে ক্লিফোর্ডের কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে নবি এগিয়ে দেন ভারতকে। এর পরেই নির্মল ছেত্রীর মাথা ফাটে বিপক্ষের সোনাম তেনজিনের সঙ্গে সংঘর্ষে। কিন্তু ওই অবস্থাতেও পুরো নব্বই মিনিট সামাল দেন ভারতীয় ডিফেন্স। নির্মল-তেজ দেখে উদ্দীপিত তাঁর সতীর্থেরা বিরতির ঠিক আগেই ২-০ করে ফেলেন। সুনীলের বাড়ানো ক্রস জেজে বুঝতে না পারলেও বলকে ‘ফলো’ করে পিছন থেকে উঠে আসা ক্লির্ফোড সেটাকে জালে পাঠাতে ভুল করেননি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নিজের দু’নম্বর গোলটি করেন ক্লিফোর্ড। মাঝমাঠ থেকে বল ধরে একক প্রয়াসে এগিয়ে গিয়ে ৩০ গজের জোরাল শটে ৩-০ করেন। পাঁচ গোলের মধ্যে এটাই সেরা। এতক্ষণ গোলের জন্য ছটফট করা সুনীল এর পরে পরপর দু’টো গোল করে ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে যান। ভারতের দু’টো ম্যাচেই সেরা হওয়াই শুধু নয়, মোট তিন গোল করে সুনীল ছেত্রীই এখন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
দিনের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তান অপ্রত্যাশিত ভাবে ৩-১ গোলে শ্রীলংকাকে হারিয়ে ভারতের চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল। এখনও আফগানরা ভারতের সমান পয়েন্টে। যদিও গোল পার্থক্যে স্যাভিওর দল এক নম্বরে। তবে ম্যাচে নির্মল-গাউলিরা কোনও চাপ আসতে দেননি দলের উপর। স্যাভিও প্রথম ম্যাচের দল থেকে সমীর নায়েক ও স্টিভন ডায়াসকে বসিয়ে নির্মল ছেত্রী ও অ্যান্থনি পেরেরাকে শুরুতে নামানোয় দলের গতি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। দু’গোলের পর ভারত যত বার গোল করছিল তত বারই মুখে চওড়া হাসি ফুটে উঠছিল স্যাভিওর মুখে। ভারতীয় দলের কোচ কি এত বড় ব্যবধানে জিতবেন ভাবতে পারেননি?
খেলার শেষে স্যাভিও যদিও বললেন “জেতাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। ব্যবধান নয়। দল জেতায় আমি খুশি।” পরপর দু’ম্যাচের সেরা সুনীল বললেন, “ আফগানিস্তানের সঙ্গে ড্র করে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। আজ পাঁচ গোলে জিতে আমদের দুশ্চিন্তা কেটে গেছে। আমার নিজের গোল করার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল দলের জয়। গ্লাসগো-টাসগো নিয়ে এখন কিচ্ছু ভাবছি না। শুধু সাফ কাপের কথাই মাথায় রাখছি। এখন আমার লক্ষ্য সব ক্লান্তি কাটিয়ে এই টুর্নামেন্টে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করা।”
ভারত: করণজিৎ, নির্মল, মহেশ, গৌরমাঙ্গি, নবি, অ্যান্থনি, ক্লাইম্যাক্স (জুয়েল), রোকাস, ক্লিফোর্ড (লালরিনডিকা), জেজে (জোয়াকিম), সুনীল। |