প্রযুক্তিগত ত্রুটি সারিয়ে মেট্রোর নতুন রেক বিশবাঁও জলে
বোধোদয় হল দু’বছর পর। প্রথম দিকে না মানলেও দু’বছর পরে অবশেষে নতুন বাতানুকূল মেট্রোগুলিতেও প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে বলে মেনে নিয়েছেন রেল কর্তারা।
সেই জন্যই বরাত দেওয়া ১২টি রেকে প্রযুক্তি পরিবর্তন করছেন তাঁরা। আর তাই সময় লাগছেও অনেক। রেলের কর্তারা সোমবার জানিয়েছেন, কলকাতায় পাঠানো ওই চারটি রেকের সমস্যা দেখে এখন কলকাতা মেট্রো, ইন্টিগ্র্যাল কোচ ফ্যাক্টরি ও রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন এই তিন বিভাগের কর্তারা মিলে আলোচনা করে নতুন রেকগুলিতে ওই সমস্যা যাতে না হয় তার জন্য প্রযুক্তিগত ভাবে কিছু পরিবর্তন করছেন। তাই এই বাতানুকূল রেকগুলি এসে গেলে নতুন করে আর কোনও সমস্যা হবে না বলেও তাঁদের দাবি।
মেট্রোয় নিত্যই লেগে রয়েছে সমস্যা। আজ দরজা বন্ধ না হওয়া তো কাল ব্রেক জ্যাম হয়ে যাওয়া, পরশু দরজা না খোলা ইতাদি। আবার নতুন বাতানুকূল (এসি) রেকে এসি যন্ত্রই খারাপ হয়ে যায় মাঝে মাঝে। সব মিলিয়ে প্রায় রোজই সারা দিনে যাত্রাপথে দু’একবার থেমে যাচ্ছে মেট্রো। আর অফিসের ব্যস্ত সময়ে একবার মেট্রো আটকে গেলেই স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের ভিড়ের চাপ উপচে পড়ছে। রেলকর্তাদের একাংশের মতে, রেক না বাড়ালে মেট্রোর যাত্রাপথে বিঘ্ন কমার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই। আর নতুন রেক কবে আসবে, সঠিক ভাবে রেল বোর্ডের কর্তাদের কাছেও খোঁজ নেই। পুরনো চারটি রেকে নিত্য সমস্যা লেগে থাকার কারণে প্রযুক্তির কিছু পরিবর্তন করতে গিয়েই এই দেরি বলে রেল বোর্ডের কর্তারা জানিয়েছেন।
বোর্ড সূত্রে খবর, কলকাতা মেট্রোর হাতে আপাতত ১৮টি রেক রয়েছে। সেগুলির বেশির ভাগ আবার অনেক পুরনো। আর বাতানুকূল নতুন রেক রয়েছে ৪টি। এই চারটি রেক ঠিকঠাক কাজ করলে সমস্যা অনেকটাই কমানো যেত। বোর্ড কতার্দের বক্তব্য, জানুয়ারি মাসের মধ্যে আরও দু’টি নতুন বাতানুকূল রেক এসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ওই রেক দু’টিতে নিরাপত্তাজনিত নতুন কিছু যন্ত্র বসানোর কাজ চলায় ওই দু’টি রেকেরও কিছুটা দেরি হচ্ছে। এই দু’টি রেকে ওই ধরনের কোনও সমস্যা আর থাকবে না বলেও বোর্ড কর্তারা দাবি করেছেন।
কলকাতা মেট্রো যে ভাবে তৈরি হয়েছে তাতে এই রেকগুলিতে কামরা বাড়ানো সম্ভব নয়। কারণ কামরা বাড়াতে গেলে টানেল পরিবর্তন করতে হবে। যা করা সম্ভব নয়। ফলে বেশি যাত্রী নিতে হলে মেট্রোর চলার সময়ের ব্যবধান কমাতে হবে। আর সময়ের ব্যবধান কমাতে মেট্রোর গতি বাড়ানোও সম্ভব নয়। কারণ, কম দূরত্বে বেশি স্টেশন থাকে বলে সারা পৃথিবীতেই মেট্রো ঘণ্টায় গড়ে ৩০ কিলোমিটারের বেশি চালানো যায় না। কলকাতা মেট্রোতেও শুরু থেকে প্রান্তিক স্টেশন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গতি ধরা রয়েছে ৫৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ এখানেও গড় গতি ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার। ফলে একমাত্র উপায় রেক বাড়িয়ে মেট্রোর সময়ের ব্যবধান কমানো।
রেক না বাড়া পর্যন্ত ভিড় হলেই সমস্যা বাড়বে বলে মনে করেন রেলের প্রাক্তন কর্তারা। রেল বোর্ডের প্রাক্তন কর্তা সুভাষরঞ্জন ঠাকুরের কথায়, “কলকাতা মেট্রো ‘ব্রডগেজ’ হলেও কামরাগুলির মাপ মিটার গেজের সমান। ফলে সাধারণ ট্রেনে একটি কামরায় যাত্রী বহন
করার ক্ষমতা হচ্ছে ৫০০ জন। কিন্তু মেট্রোর ক্ষেত্রে তা হল ৩০০ জন। আর এসি রেক মাঝপথে আটকে গেলে পিছনের ট্রেনও আটকে যাবে। স্টেশনগুলিতে ভিড় বাড়বে। দরজা বন্ধ হবে না।” এই সব সমস্যা এড়িয়ে ক’টা নতুন রেক শীঘ্র আনতে পারে মেট্রো, সেটাই এখন দেখার।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.