|
|
|
|
প্রতারণায় জড়িত ধৃতের স্ত্রী’ও, নথি পেল পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
প্রতারণা মামলায় ধৃত বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী রণবীর দাসের স্ত্রী দেবলীনা দেবীকে গ্রেফতারের জন্য আদালতের অনুমতি চাইল পুলিশ। সোমবার শিলিগুড়ির অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে মামলার তদন্তকারী অফিসার এই ব্যাপারে একটি আবেদনপত্র পেশ করেন। পুলিশের দাবি, এই প্রতারণার মামলায় দেবলীনা দেবীও যুক্ত বলে সন্দেহ করা হয়েছে। শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে দেবলীনা দেবীর একটি অ্যাকাউন্টে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা লেনদেনের নথি মিলেছে। তাতে পুলিশের সন্দেহ, দেবলীনা দেবীও ওই প্রতারণার ঘটনায় জড়িত। এদিন পুলিশের ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক সন্তোষ পাঠক অবশ্য কোনও রায় দেননি। সরকারি আইনজীবী রণজিৎ সাহা জানান, কেন ওই মহিলাকে গ্রেফতারের জন্য আদালতের অনুমতি প্রয়োজন পুলিশকে তা জানাতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারলে বিচারক নিশ্চয়ই যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন। ধৃত রাজীব ভদ্রের সঙ্গে মুম্বইয়ের ওই প্রতারণা সংস্থার যোগাযোগের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। পুলিশের তদন্তকারী দলের কয়েকজনের দাবি, শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে রণবীর দাস, দেবলীনা দেবী ছাড়াও রাজীব ভদ্রের অ্যাকাউন্ট ছিল। ওই ব্যাঙ্কে রাজীবের ১৬টি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। সবকটি অ্যাকাউন্টে মোট ৭৮ লক্ষ টাকার লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। রাজীববাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে দেবলীনা দেবীর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, মুম্বইয়ের ওই প্রতারণা সংস্থা থেকে সরাসরি রাজীবের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। পরে রাজীব ৪টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন। মামলার এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “এখনও যে সমস্ত তথ্য মিলেছে তাতে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত চলছে। আরও অনেক তথ্য মিলবে এবং সমস্ত দুষ্কৃতী ধরা পড়বে বলে আমরা আশা করছি।” আদালতে রাজীববাবুর আইনজীবী সুনীল সরকার এদিনও দাবি করেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ। এদিন পুলিশ এই প্রতারণা মামলায় ধৃত জীবন বিমা নিগমের কর্মী রাজীব ভদ্র, মুম্বইয়ের লগ্নিকারী সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রামশা জীবন সাহেবরাম চৌধুরী এবং দেবব্রত পালকে আদালতে হাজির করে। বিচারক তাঁদের একটি মামলায় জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। কিন্তু ধৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় জেলেই পাঠানো হয়। তবে ওই তিনজন এবং রণবীর দাসকে ফের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য এদিন ফের আদালতে আবেদন পেশ করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, এদিন ফের শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগির কাছে এই মামলায় নতুন একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। কোচবিহারের ঘোকসাডাঙার আটপুকুরি এলাকার বাসিন্দা রতন দাসের অভিযোগ, রাজীব ভদ্র এবং অন্য এক এজেন্টের মাধ্যমে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি মোট ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা লগ্নি করেছিলেন। প্রতিবারই ওই টাকা তিনি শিলিগুড়িতে এসে দিয়ে যান। লগ্নি করা টাকা করমুক্ত বলেও রাজীব ভদ্র তাঁকে আশ্বাস দেন বলে ওই ব্যক্তির দাবি। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও টাকা ফেরত না -পেয়ে তিনি শিলিগুড়িতে জীবন বিমা নিগমের দফতরে গিয়ে রাজীব ভদ্রের সঙ্গে দেখা করেন। আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাননি। রতনবাবু বলেন, “কৃষি কাজ করে সংসার চালাই। এতগুলো টাকা মার যাওয়ায় কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। সংবাদ মাধ্যমে সমস্ত ঘটনা জানার পরে শিলিগুড়িতে ছুটে আসি।” রতনবাবুর আইনজীবী সন্দীপ মণ্ডলের অভিযোগ, “এদিন রতনবাবুকে নিয়ে শিলিগুড়ি থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। তার পরেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দফতরে অভিযোগ জমা দিই।” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|