বিপণিতে হামলায় অভিযুক্ত কংগ্রেস, প্রতিবাদে বন্ধ মেলা
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে নিয়ে লেখা একটি বইয়ে আপত্তিকর বিষয় রয়েছে, এই অভিযোগে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বইমেলার একটি স্টলে ঢুকে হামলা চালিয়ে জন বিক্রেতাকে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বেলা টে নাগাদ শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম লাগোয়া মেলার মাঠে ঘটনাটি ঘটেছে। বইমেলা কমিটির অভিযোগ, শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত মাটিগাড়া -নকশালবাড়ির বিধায়ক তথা দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (সমতল ) সভাপতি শঙ্কর মালাকারের উপস্থিতিতে ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে মেয়র, বিধায়কের ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে স্টল থেকে নিগৃহীত দুই বই বিক্রেতাকে থানায় নিয়ে গেলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ওই দুই বিক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর চাউর হতেই সব প্রকাশক স্টল বন্ধ করে দেন। মুহূর্তের মধ্যে বইমেলা বন্ধ হয়ে যায়। ওই দুই বিক্রেতাকে থানা থেকে মেলার মাঠে পৌঁছে দেওয়া না -হলে কোনও স্টল খোলা হবে না বলে প্রকাশকরা জানিয়ে দেন। চাপের মুখে পড়ে পুলিশ সেই দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে জানালে প্রায় ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে পুলিশ দুজনকে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জামাভলগি বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে গোলমাল এড়াতে ওই দুজনকে জেরার জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়।”
গাঁধী বিষয়ক বই নিয়ে গোলমাল। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
যে বইটি নিয়ে শিলিগুড়ি মেয়র, মাটিগাড়া -নকশালবাড়ির বিধায়কদের আপত্তি সেটি অনেকদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে। একাধিক সংস্করণ মুদ্রিত হয়েছে। তা বইয়ের দোকানেও মেলে। কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও সরকারের তরফে বইটি নিয়ে নিষেধাজ্ঞাও নেই। তা হলে কংগ্রেসের দুজন জনপ্রতিনিধি কেন আইন নিজের হাতে তুলে নিলেন সেই প্রশ্ন তুলেছে বইমেলার আয়োজক গ্রেটার শিলিগুড়ি বুক সেলার্স অ্যাণ্ড পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সহ সভাপতি হরিসাধন ঘোষ বলেন, “ওই বইটি নিয়ে কারও ভিন্ন মত থাকতেই পারে। তা বলে নেতা -নেত্রীদের উপস্থিতিতে আইন নিজের হাতে তুলে হামলা হবে তা ভাবতেই পারছি না। তাই প্রতিবাদে স্টল বন্ধ রেখে আন্দোলন করেছি। তাতে ক্রেতাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। সে জন্য দুঃখিত।” শিলিগুড়ির মেয়র এবং মাটিগাড়া -নকশালবাড়ির বিধায়ক, দুজনেই হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন। মেয়রের যুক্তি, “বইটি কবে প্রকাশ হয়েছে সেটি বিষয় নয়। বইটিতে গাঁধীজি সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য রয়েছে। এটা আমরা কিছুতেই মেনে নেব না। তাই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। কোনও হামলা চালানো হয়নি। আমি মেয়র হিসেবে নই, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।” দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্করবাবু জানান, তাঁরা ওই ঘটনার প্রতিবাদ করার সময়ে মেলার দর্শনার্থীদের একাংশ উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সেই সময়ে হয়তো স্টলে কিছু লোকজন ঢুকে পড়ে হইচই বাঁধিয়েছেন বলে শঙ্করবাবুর দাবি। এই ঘটনায় বিস্মিত প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “কোনও বই নিয়ে কারও আপত্তি থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে আইন হাতে তুলে নিয়ে মেয়র, বিধায়করা হামলা চালাবেন এটা কোন গণতন্ত্র। আমরা কোন পথে যাচ্ছি ! ” যে স্টলে হামলার অভিযোগ উঠেছে তাঁর কর্মী সঞ্জয় সাহা বলেন, “আমি বইটি পড়িনি। সেটি নিয়ে কী অভিযোগ আছে তাও জানি না। আচমকা আমাকে টেনে নিয়ে বাইরে বের করে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। পরে পুলিশ আমাকে নিয়ে যায়।” ওই স্টলের পাশের দোকানের এক কর্মী সুভাষ মল্লিক বলেন, “২০ জনের মতো একটি দল পাশের স্টলের কর্মীদের মারধর করছিল। আমি প্রতিবাদ জানাতে গেলে আমাকে মারধর করা হয়। পুলিশ বইমেলা থেকে গাঁধীজী সংক্রান্ত ওই বইটির ৩০ কপি বাজেয়াপ্ত করেছে।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.