পাহাড়ে পুরভোট থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে বামফ্রন্ট
জিএনএলএফের পরে বার দার্জিলিং পাহাড়ের পুরভোটে যোগ না দেওয়ার কথা ঘোষণা করল বামফ্রন্ট। সেই সঙ্গে অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগও।
সোমবার দুপুরে শিলিগুড়িতে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য ওই সিদ্ধান্ত জানান। বিকেলে দার্জিলিঙে অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি ভোট থেকে বিরত থাকার কথা ঘোষণা করেন। দু’টি দলেরই দাবি, ‘বয়কট’ নয়, পাহাড়ে ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ’ পুরোপুরি ফেরেনি বলে তাঁরা ভোট -প্রক্রিয়ায় যোগ দেবেন না।
যে নেতাদের উপরে ভর করে ১৯৪৬ সালে বিধানসভায় পা দিয়েছিলেন বামপন্থীরা, তাঁদের অন্যতম দার্জিলিং পাহাড়ের রতনলাল ব্রাহ্মণ। তাঁর সঙ্গী ছিলেন জ্যোতি বসু এবং রূপনারায়ণ রায়। কেন সেই পাহাড়েই আজ নির্বাচন -প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বামফ্রন্ট? অশোকবাবুর দাবি, “মোর্চার বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে না। কোনও আঞ্চলিক দল তো নয়ই, কংগ্রেসের মতো দলও ভোটে দাঁড়াতে পারছে না। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ‘পাহাড়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে’। আসলে ওখানে বিমল গুরুঙ্গকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।” অশোকবাবুর ‘কটাক্ষ’, “পাহাড়ে যদি মোর্চার বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী দেয়, তা হলে গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা তাদের সমর্থন করব।” বামফ্রন্টের বক্তব্য মানছেন না তৃণমূল এবং মোর্চার নেতারা। তাঁদের দাবি, পাহাড়ে বামফ্রন্টের সাংগঠনিক শক্তি তলানিতে পৌঁছেছে। ভোট -প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ানো সেই কারণেই। রবিবারই জলপাইগুড়িতে জিএনএলএফ প্রধান সুবাস ঘিসিং জানিয়েছিলেন, পাহাড়ে পুর -ভোটে যোগ দেবে না তাঁর দল।
শিলিগুড়ি পুরসভার সামনে বামেদের অবস্থান বিক্ষোভে বক্তব্য
রাখছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে রাজ্যের নব্য শাসক দলের কিছু নেতার মন্তব্য, “রবিবার ঘিসিং বললেন, ‘পুরভোটে যাব না’। এখন বামেরাও একই কথা বলছেন। তা হলে কি ধরে নিতে হবে, ঘিসিংকে দিয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হচ্ছিল? একটা সময় সুবাস ঘিসিংয়ের বিরোধিতায় বিমল গুরুঙ্গকে খাড়া করেছিল বামফ্রন্ট। এখন তো মনে হচ্ছে, ছবিটা পুরো উল্টে গিয়েছে।”
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা প্রচার সচিব হরকাবাহাদুর ছেত্রী আবার মনে করেন, “যে দলগুলো ভোট চাইতে পাহাড়ের মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে নানা বঞ্চনার প্রশ্নে জবাবদিহি করতে পারবে না, তারাই সরে দাঁড়াচ্ছে।” তাঁর দাবি, “পাহাড়ে শান্তি রয়েছে। পর্যটকেরা নির্বিঘ্নে ঘুরছেন। গণতান্ত্রিক পরিবেশ রয়েছে বলেই তো ভোট হচ্ছে। মিথ্যা অভিযোগ করলে তো হবে না ! ” পাশাপাশি, ওই মোর্চা নেতারও পর্যবেক্ষণ, “আগের দিন (রবিবার ) ঘিসিং ঘোষণা করলেন। পর দিন অশোকবাবুরা ভোট থেকে বিরত হলেন। অশোকবাবুর সঙ্গে সুবাস ঘিসিংয়ের যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেল।”
পাহাড়ে পুর -ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনও চলছে। পাহাড় সমতলের রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ মনে করছেন, মোর্চার বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত তিনটি দল নির্বাচনে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করায় প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাহাড়ের তিনটি পুরসভা দখল করতে চলেছেন বিমল গুরুঙ্গরা। কারণ, ওই তিনটি দলের অনুপস্থিতিতে পাহাড়ে মোর্চার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো দল হিসেবে রয়েছে সিপিআরএম, দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (পাহাড় ) এবং তৃণমূল। তাদের মধ্যে চা -বাগান এলাকায় কিছুটা শক্তি থাকলেও পুর -এলাকাগুলিতে সিপিআরএমের তেমন সংগঠন এখনও নেই। পক্ষান্তরে পাহাড়ে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের কয়েকজন নেতা থাকলেও পুর -এলাকাগুলিতে যে তাঁদের সংগঠন প্রায় নেই, সে কথা দু’দলেরই অনেক নেতা স্বীকার করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.