|
|
|
|
এইমস, বগুলা, মোক্তার |
কংগ্রেস-তৃণমূল জোটে বৃদ্ধি পাচ্ছে ‘মতবিরোধ’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ ও কলকাতা |
রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল, নদিয়ার বগুলায় পুলিশের গুলিতে কংগ্রেসের মহিলাকর্মীর মৃত্যু, একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলায় অভিযুক্ত মোক্তারকে দলে নেওয়ার মতো বিভিন্ন প্রশ্নে রাজ্যে কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্কে ‘টানাপোড়েন’ ক্রমশ বাড়ছে। যদিও জোট ভাঙার কোনও প্রয়াসই কোনও তরফে নেই। ঘটনাচক্রে, প্রকাশ্যে ছোট শরিক কংগ্লেসই বেশি ‘চড়া’।
রায়গঞ্জ নিয়ে উত্তর দিনাজপুরে কংগ্রেস-তৃণমূলের মতবিরোধ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। ওই হাসপাতাল কল্যাণীতে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘দ্বিচারিতা’র অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস। আবার শাসক জোটের শরিক হয়েও ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’ তুলে কংগ্রেস রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করছে দাবি করে পাল্টা আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলার তৃণমূল নেতা আবদুল করিম চৌধুরী। তাঁর কথায়, “আমরাও রায়গঞ্জে এইমস চাই। তা বলে কংগ্রেসের মিথ্যা প্রচার মেনে নেব না। আন্দোলন করব।” |
|
এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল গড়ার দাবিতে রায়গঞ্জে কংগ্রেসের মিছিল। ছবি: তরুণ দেবনাথ |
সোমবার এইমসের ধাঁচে হাসপাতালের দাবিতে কংগ্রেসের ডাকে রায়গঞ্জে মিছিল ও সভা হয়। এলাকার সাংসদ দীপা দাশমুন্সি ছাড়াও সেখানে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, ওমপ্রকাশ মিশ্র, নির্বেদ রায়, সুখবিলাস বর্মা, জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত সহ জেলার কংগ্রেস বিধায়কেরা। প্রদীপবাবু বলেন, “সরকারে থাকলেই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা যাবে না, তা ঠিক নয়। উত্তরবঙ্গের স্বার্থে হাসপাতালের জন্য জমি অধিগ্রহণের দাবিতে সাধারণ মানুষকে নিয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। অধিগ্রহণের ব্যাপারে দলের সাংসদ-বিধায়কেরা মুখ্যমন্ত্রীর সময় চেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত তাঁদের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার সমাধান করা।” যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে ওই বিষয়ে দীপার পাশে দাঁড়িয়েছেন মালদহের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। কয়েকমাস আগেই যুব কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন নিয়ে যাঁর গোষ্ঠীর সঙ্গে দীপা-গোষ্ঠীর ‘হাতাহাতি’ হয়েছিল! চাঁচলে মৌসম এদিন বলেন, “রায়গঞ্জে ওই হাসপাতাল গড়া নিয়ে অযথা জলঘোলা হচ্ছে। দীপাদেবীর প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।” ওই দাবি নিয়ে এক প্রতিনিধিদল শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সহ সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করবেন বলেও তিনি জানান। মন্ত্রী করিম চৌধুরীর পাল্টা বক্তব্য, “কংগ্রেসের উচিত সরকার থেকে বেরিয়ে আন্দোলন করা! ১৯ নভেম্বর রায়গঞ্জে আমাদের দলের জেলা কমিটির বৈঠক। তার পরে জেলা থেকে এক প্রতিনিধিদল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে যাবে। ওই দিন থেকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জেলায় পাল্টা আন্দোলনে নামা হবে।”
এ দিনই কলকাতায় তৃণমূল সাংসদ তথা যুব তৃণমূল সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, সিপিএমের ‘মদতপুষ্ট’ কংগ্রেস নেতাদের একাংশ রাজ্যে জোট ভাঙার চেষ্টা করছেন। বগুলার ঘটনা উল্লেখ করে শুভেন্দু বলেন, কংগ্রেসের মুষ্টিমেয় নেতা তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে ‘কুৎসা’ করেছেন। তাঁর কথায় “সিপিএমের প্রশ্রয়ে কংগ্রেসের জোট-বিরোধী কিছু নেতা তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও হামলা করে অচলাবস্থা তৈরি করতে ও জোট ভাঙতে চাইছেন।” বগুলায় কংগ্রেসের সাম্প্রতিক সভার পাল্টা আগামী ১৭ ডিসেম্বর সেখানে সভা করবেন জানিয়ে মোক্তার-প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “যে দল রাম পিয়ারি রাম বা খালেক মোল্লার মতো নেতাকে ধরে রাখতে পারে না অথচ মোক্তারকে সদস্য করে, তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট!” |
|
|
|
|
|