জলাধার তৈরি করে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা এখনও করে উঠতে পারল না নৈহাটি পুরসভা। ২০০৬ সালে প্রকল্পটি হাতে নেয় তৎকালীন বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরবোর্ড। গত বছর বোর্ডের ক্ষমতা আসে তৃণমূলের হাতে। তারাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এক বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। কিন্তু আদৌ তা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। তাঁদের মতে, আগেও রাস্তা খুঁড়ে পাইপ বসানোর কাজ হয়েছে। নতুন পুরবোর্ড ফের একই জায়গায় একই কাজ করছে। তা ছাড়া, রয়েছে নিকাশির সমস্যাও। দুর্ভোগ তো কমেইনি, বরং বেড়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে,ওই প্রকল্পের পানীয় জলের পাইপ লাইন ঢোকার কথা নয়াবাজার থেকে রামকৃষ্ণ টকিজ হয়ে নদিয়া মিলের দিকে। এর মধ্যে গৌরীপুর, চৌমাথা-সহ বেশ কিছু জায়গায় নতুন বসানো পাইপ লাইন খারাপ হয়ে যাওয়ায় ফের তা সারাতে হচ্ছে। কেএমডিএ-র তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পের জল সরবরাহের কাজ আগামী তিন মাসের মধ্যেই শুরু হওয়ার কথা।
কিন্তু কেএমডিএ’র জল বিভাগের বাস্তুকার প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের কথাতেই স্পষ্ট, যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে কাজ করলেও তা শেষ হতে সময় আরও বেশি লাগবে। তিনি বলেন, “আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। মাঝে কিছু সমস্যা হয়েছে। তার জন্যই দেরি হয়েছে। রেলের জায়গা দিয়ে পাইপ লাইন বসানো নিয়ে অনুমতি মিলছিল না। সেই অনুমতি সম্প্রতি মিলেছে। কিন্তু পুরো কাজ তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে পারব না”। তবে তাঁর আশ্বাস, “কল্যাণী জলাধার থেকে শীঘ্রই আংশিক ভাবে জল সরবরাহ আমরা চালু করতে পারব বলে আশা করছি।”
নৈহাটি পুরসভার ৩১টি ওয়ার্ডের মধ্যে যে তিনটি ওয়ার্ডে পাইপে ফুটো থাকা এবং বসানোর গণ্ডগোলের জেরে কাজ ব্যাহত হয়েছে, সেই ৮, ১২ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড রয়েছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ত ঘোষপাড়া রোডের ধারে। বারবার খোঁড়াখুঁড়ির ফলে সেই রাস্তার অবস্থা বেহাল। এই রাস্তার ধারেই নৈহাটির অন্যতম বড় বাজার। রাস্তা খোঁড়ায় বাজারও বন্ধ রাখতে হয়েছে। বন্ধ বাস-অটো চলাচলও। চলতি সপ্তাহেই ফের রাস্তাটিকে বন্ধ রেখে কাজ করার পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা।
পুরপ্রধান ধীলন সরকার বলেন, “আগের বোর্ডের সময়ে ঠিকাদার সংস্থা কিছুই কাজ করেনি। উল্টে এমন ক্ষতি করেছে যে খেসারত দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। একবার রাস্তা খুঁড়ে দু’দিন যান চলাচল ও বাজার বন্ধ রেখেছিলাম। ফের তা করতে হবে। নইলে মানুষ জল পাবেন না। আমরা এখনও দিন ঠিক করিনি। তবে, দু’চার দিনের মধ্যেই কাজটি করতে হবে।”
কিন্তু তার পরেও কাজের কাজ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। |