বার্ধক্য ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা আটকে রাখা-সহ একাধিক ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দফতরে তালাবন্ধ করে রাখা হল পোস্টমাস্টারকে। এমনকী পুলিশকর্মীদেরও ঘণ্টা পাঁচেক ডাকঘরে আটকে রাখেন বিক্ষোভকারীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর থানার বড় বাঁকড়া শাখা ডাকঘরে। ওই পোস্টমাস্টার বনভূষণ মণ্ডল বলেন, “আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ যে-সব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্যি নয়। তবে এটা ঠিক, সময়মতো বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া যায়নি। কারণ, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে কাটিয়াহাট উপ-ডাকঘরে বিভিন্ন ভাতা বাবদ পাওয়া ৪১ হাজার ৪০০ টাকার চেক জমা দিয়েছি। সরকারি নিয়ম মেনে ওই চেক ক্যাশ হতে সময় লাগছে। তাই দেরি। ওঁরা ভুল বুঝে আমাদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।” কাটিয়াহাট উপ-ডাকঘরের পোস্টমাস্টার প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চেক না ভাঙালে কী ভাবে টাকা দেওয়া সম্ভব? মানুষ ভুল বুঝে ওঁকে আটকে রেখেছেন। চেক ক্যাশ হলেই প্রাপ্য দিয়ে দেওয়া হবে।” |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কাটিয়াহাট উপ-ডাকঘরের অধীনে বাঁকড়া গোকুলপুর পঞ্চায়েতের বড় বাঁকড়া বাজার সংলগ্ন ওই শাখা ডাকঘর। এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ শতাধিক মানুষ সেখানে বিক্ষোভ শুরু করেন। গ্রিলের দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। বেলা ১১টা নাগাদ পুলিশ গেলে বিক্ষোভকারীরা তাদেরও অফিসে ঢুকিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। তাঁদের অভিযোগ, ভাতা প্রাপকদের বেশিরভাগই নিরক্ষর হওয়ায় পোস্টমাস্টার তাঁদের ভাতার টাকা কম দিয়ে বেশি টাকার কাগজে টিপ সই করিয়ে নিচ্ছেন। তার উপর ভাতার টাকা নিতে এলে দিনের পর দিন ‘আজ নয়, কাল আসুন’ শুনতে হচ্ছে। তাঁদের দাবি, সংশ্লিষ্ট আধিকারিক এসে যতক্ষণ না অভিযুক্ত পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন ততক্ষণ তালা খোলা হবে না। বিকেলে বসিরহাট মহকুমা ডাকঘরের এক আধিকারিক গৌতম দেব বড় বাঁকড়া শাখা ডাকঘরে পৌঁছন। বনভূষণবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তখন বিক্ষোভকারীরা পোস্টমাস্টার, পুলিশকর্মীকে ছেড়ে দেন। বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “পুলিশকে তালাবন্ধ করে রাখা হয়নি। পোস্টামাস্টার যাতে আক্রান্ত না হন, সেই জন্য পুলিশ ভিতরে বসেছিল।” |