সম্প্রতি তৃণমূলের আনা অনাস্থায় ক্যানিং-১ ব্লকের বাঁশড়া গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয় সিপিএমের। সোমবার ওই পঞ্চায়েতের ৬ সিপিএম সদস্য পদত্যাগপত্র জমা দিলেন বিডিও রাজদীপ দত্তের কাছে। চিঠিতে পদত্যাগের কারণ হিসাবে তাঁরা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের কোনও বৈঠকেই তাঁদের ডাকা হচ্ছে না। ত্রাণের ত্রিপল, চাল বিলিতে দুর্নীতি করা হচ্ছে। এমনকী বিভিন্ন কাজে অনৈতিক ভাবে তাঁদের জোর করিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সই না-করলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ অভিযোগ অবশ্য তৃণমূল মানেনি।
ক্যানিং-১ ব্লকের বিডিও রাজদীপ দত্ত বলেন, “৬ জন পঞ্চায়েত সদস্য পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী দেখব তা কতটা গ্রহণযোগ্য। তার পরেই এ বিষয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেব।”
গত ২০০৮ সালে ২২ আসনের ওই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসে বামেরা। সিপিএম ৯টি, ফরওয়ার্ড ব্লক ৪টি, আরএসপি ১টি এবং তৃণমূল ৮টি আসন পায়। সম্প্রতি প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। হেরে যায় বামেরা। তৃণমূূলের দাবি, দুই সিপিএম সদস্য তাদের সমর্থন করে। প্রধান হন তৃণমূূলের বিজন মণ্ডল। পদত্যাগ করতে চাওয়া ওই পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য জাকির লস্কর এবং গোবিন্দ বিশ্বাস এ দিন বলেন, “তৃণমূলের পঞ্চায়েত খেয়ালখুশি মতো কাজ করছে। আমাদের দিয়ে জোর করে অনৈতিক ভাবে বিভিন্ন কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সই না করলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমাদের এক সদস্যের বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়েছে। এই অবস্থায় পঞ্চায়েতে থাকা যায় না। তাই বিডিও-র কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছি।” একই অভিযোগ তুলে সিপিএমের ক্যানিং জোনাল কমিটির সদস্য রুহুল আমিন গাজি বলেন, “অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতিতে কাজ করা সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে আমাদের সদস্যেরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।”
যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান। তিনি বলেন, “আমরা সবেমাত্র পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় এসেছি। তার মধ্যে বেশ কিছু দিন পঞ্চায়েত বন্ধ ছিল। এখনও পর্যন্ত সে ভাবে কোনও সরকারি প্রকল্পের কাজে হাত দিতে পারিনি। ওঁরা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগ আনছে।” ক্যানিং-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শৈবাল লাহিড়ি বলেন, “যদি দলের কেউ কোনও অনৈতিক কাজ করেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই পঞ্চায়েতের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।” |