বাড়িতে হানা দিয়ে গয়না, টাকা লুঠ করে পালাল সশস্ত্র ডাকাতের দল। তাদের বাধা দিতে গিয়ে চপারের আঘাতে গুরুতর জখম হলেন গৃহকর্তা। রবিবার রাত আড়াইটে নাগাদ দক্ষিণ শহরতলির বারুইপুর এলাকায় পশ্চিম পাঁচগাছিতে ঘটেছে এই ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়িতে সপরিবার থাকেন রাজ্য সরকারের ভূমি দফতরের কর্মী সব্যসাচী দাস। ঘটনার সময়ে তাঁর স্ত্রী কল্পনাদেবী এবং ছেলে অরিন্দমও ছিলেন সেখানে। সব্যসাচীবাবু জানান, রিভলভার, চপার নিয়ে তিন দুষ্কৃতী ওই বাড়িতে হানা দেয়। একটি ঘরে সব্যসাচীবাবু ও তাঁর স্ত্রী ঘুমোচ্ছিলেন। পাশের ঘরে ছিলেন অরিন্দম। দুষ্কৃতীরা প্রথমে সব্যসাচীবাবুর ঘরে ঢুকে তাঁকে ঘুম থেকে তুলে আলমারির চাবি চায়। চাবি দিতে অস্বীকার করেন তিনি। তখন চপার দিয়ে তাঁর মাথায়, হাতে আঘাত করা হয়। বাবা-মা’র চিৎকার শুনে ছুটে আসেন অরিন্দম। তখন ওই যুবকের মাথায় অস্ত্র ঠেকায় দুষ্কৃতীরা। বেগতিক দেখে আলমারির চাবি হানাদারদের দিয়ে দেওয়া হয়। আলমারির লকার থেকে প্রায় সাত ভরি সোনার গয়না, ১৫ হাজার টাকা এবং চারটি মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। দাস পরিবারের আশঙ্কা, ওই বাড়ির ছাদের দরজার উপরে কিছুটা ফাঁকা জায়গা রয়েছে। দুষ্কৃতীরা সম্ভবত সেখান দিয়েই ঢুকেছিল। |
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “ওই এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ।” ধারালো অস্ত্রে জখম সব্যসাচীবাবুকে ওই রাতেই বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।
সব্যসাচীবাবুর ছেলে অরিন্দম বলেন, “বাবা-মা পাশের ঘরে শুয়েছিল। রাতের দিকে হঠাৎ ঘুম ভেঙে ঘরে অচেনা গলা শুনতে পাই। বিছানা থেকে উঠে ওই ঘরে যাই। দেখি, বাবার মাথা ও হাত থেকে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। তখনই মুখে কাপড় বাঁধা এক জন আমার মাথায় চপার ঠেকায়। বলে, ‘চুপচাপ আলমারির চাবিটা দে। না-হলে এটা (চপার) তোর পেটে ঢুকবে।” বিপদ বুঝে দুষ্কৃতীদের হাতে চাবি দিয়ে দেওয়া হয়। বছর পঁচিশের অরিন্দম জানিয়েছেন, কাজ ‘হাসিল’ করার পরে দুষ্কৃতীরা তাঁর পিঠেই রিভলভার ঠেকিয়ে সদর দরজা খুলে দিতে বলে। দরজার তালা খুলতেই পালিয়ে যায় তারা। এই ঘটনার তদন্তকারী অফিসারেরা জেনেছেন, তিন দুষ্কৃতীর মুখই কাপড়ে ঢাকা ছিল। তাদের বয়স ২৫-২৬ বছরের মধ্যে। সকলে বাংলায় কথা বলছিল। |